এ উপজেলার ৭ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে মোর ৭৫ জন নারী মনোনয়ন পত্র জমা দেন এবং ৭৫ জনই বৈধ ঘোষিত হওশার পর; ১ জন নারী মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করায় বর্তমানে ৭৪ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে মোট ২৩৮ জন বৈধ পুরুষ প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করায় ২৩৪ জন মেম্বার প্রার্থী ৭ ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছে।
তন্মধ্যে আটপাড়া উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ১১ নভেম্বর সারাদিন ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ৭ ইউপিতে ৭ জন চেয়ারম্যান, ২১ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য ও ৬৩ জন সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য নির্বাচিত হবেন।
আটপাড়া উপজেলার সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৭ শত ৫৩ জন। পুরুষ ভোটার ৫৯ হাজার ৯ শত ১৩ জন। নারী ভোটার ৫৮ হাজার ৮ শত ৩৮ জন ও হিজড়া ভোটার ২ জন। এ উপজেলার ৭ ইউনিয়নে ৬৭ টি কেন্দ্রে ৩৩৯ টি ভোট কক্ষে ১১ নভেম্বর চলবে ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ।
আটপাড়া উপজেলার ১ নং স্বরমুশিয়া ইউনিয়নে ১৯ হাজার ৫৯৪ জন ভোটাররে মধ্যে পুরুষ ৯৭৭৮ জন ও মহিলা ভোটার ৯৮১৬ জন। এই ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র ৯ টি ও ভোট কক্ষ রয়েছে ৫৬ টি। স্বরমুশিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৩ জন প্রার্থী। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকার মনোনীত প্রার্থী মোঃ আব্দুস ছাত্তার, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী মোঃ আব্দর রেজ্জাক এবং চশমা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ জহিরুল ইসলাম সামরুজ। এ নির্বাচনে চশমা ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের মধ্যে হবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
এছাড়াও স্বরমুশিয়া ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য (নারী) পদে ১১ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে।
আটপাড়া উপজেলার ২ নং শুনই ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৫২৭১ জনের মধ্যে নারী ভোটার ৭৫৪৮ জন ও পুরুষ ভোটার ৭৭২৪ জন। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে ৩ জন প্রার্থী। সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য ( নারী) পদে ৮ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৩৮ জন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ৩ জন হলেন- ঘোড়া প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ ছানোয়ার উদ্দিন,আনারস প্রতীক নিয়ে মোঃ কামাল উদ্দিন ও নৌকা প্রতীকের মোঃ রুকন উজ্জামান। এ ইউনিয়ন ত্রিমুখী লড়াই শেষে নির্বাচিত হবেন ইউপি চেয়ারম্যান। শুনই ইউনিয়নে ১০ টি ভোট কেন্দ্রের ৪৪ টি ভোট কক্ষে গ্রহণ করা হবে ভোট।
এ উপজেলার ৩ নং নুনেশ্বর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ২ জন। চশমা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম.জি হায়দার ও নৌকা প্রতীকে মোঃ শাহজাহান কবীর। সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ১০ জন নারী ও সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৩৩ জন পুরুষ প্রার্থী রয়েছে। নুনেশ্বর ইউনিয়নে ১৬২৯৩ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮৩০৩ জন ও মহিলা ভোটার ৭৯৯০ জন। ১১ নভেম্বর এ ইউনিয়ন ১০ টি ভোট কেন্দ্রের ৪৫ টি ভোট কক্ষে চলবে ভোট গ্রহণ।
আটপাড়া উপজেলার সবচেয়ে আলোচিত সদর ইউনিয়ন ৪ নং বানিয়াজান। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফেরদৌস রানা আনজু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মোঃ নিজাম ইয়ার খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। নৌকা নিশ্চিত বিজয় প্রত্যাশায় ফেরদৌস রানা আন্জ ভোটের প্রার্থনায় নির্বাচনী মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন এছাড়াও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ৯ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৩৭ জন প্রার্থী রয়েছে। বানিয়াজান ইউপি নির্বাচনে ৯ টি কেন্দ্রের ৫১ টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গহণ শেষ করা হবে। এ ইউনিয়নে ৮৯০১ জন পুরুষ ও ৯১০৬ জন মহিলা ভোটার মিলিয়ে মোট ১৮০০৭ জন ভোটার রয়েছে।
এ নির্বাচনে আটপাড়া উপজেলার সবচেয়ে বেশী আলোচিত আরেকটি ইউনিয়ন হল ৫ নং তেলিগাতী। এই ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতীক পেয়ে জোরালো প্রচারণায় ভোটের মাঠে রয়েছে মঙ্গল সিদ্ধ গ্রামের অখিল চন্দ্র দাস। এছাড়াও চেয়ারম্যান পদে এ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আরও ৩ জন। তারা হলেন গাতীপাড়া গ্রামের কবীর খান। তার মার্কা আনারস। টেংগা গ্রামের মোঃ আনিসুর রহমান চশমা প্রতীক নিয়ে মাঠে আছে। রামসিদ্ধ গ্রামের মোঃ সন্জুর রহমান ঘোড়া প্রতীক নিয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ইউনিয়নে নৌকা এবং ঘোড়ার ভোট যুদ্ধের লড়াইয়ের সম্ভাবনা বেশী। তেলিগাতী ইউনিয়নে ১৯৩৬৯ জন ভোটারের মধ্যে ১ জন হিজড়া ও ৯৭৩৯ জন পুরুষ এবং ৯৬২৯ জন নারী ভোটার। এ ইউনিয়নে ৯ টি কেন্দ্র ও ৫৬ টি ভোট কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। তেলিগাতী ইউপি নির্বাচনে সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্যের ৩ আসনে ১১ জন মহিলা ও সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে রয়েছে ৩২ জন প্রার্থী।
২য় ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে আটপাড়ার সকল ইউনিয়নের মধ্যে ৬ নং দুওজ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা মাঠে রয়েছে। এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মোট ৬ জন প্রার্থী রয়েছে। রয়েছে নারী চেয়ারম্যান প্রার্থীও। এ ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকার মনোনীত প্রার্থী ইকরাটিয়া গ্রামের সাইদুল হক তালুকদার। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী মানিষা গ্রামের বুলবুল। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছে আসাদুজ্জামান টিপন,তিনি চশমা প্রতীক পেয়ে মাঠ আছে। আনারস প্রতীক নিয়ে দুওজ গ্রামের মোছাঃ মাহমুদা আক্তার, টেলিফোন মার্কা নিয়ে শ্রীরাম পাশার মোঃ কায়ছার ইমরান বাবুল ও ঘোড়া প্রতীক নিয়ে মুগারহাটার শাহিন তালুকদার।
এ ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৪১৮৩ জন। পুরুষ ভোটার ৭১৫১ জন। মহিলা ভোটার ৭০৩২ জন। ১০ টি ভোট কেন্দ্রের ৪১ টি ভোট কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ১৩ জন ও সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ৩৩ জন প্রার্থী রয়েছে। দুওজ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী সংখ্যা ছয়-ভোট শেষে বুঝা যাবে কার হবে জয়!?
ক্রমিক নম্বর অনুসারে আটপাড়া উপজেলার ৭ নং সুখারী ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নে মোট জনসংখ্যার ১৬০৩৫ জন ভোটারের মধ্যে ৮৩১৭ জন পুরুষ ও ৭৭১৮ জন মহিলা ভোটার। এ ইউনিয়নে মোট ৪ জন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছে তন্মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ শাহজাহান। তার গ্রামের বাড়ী হাতিয়া। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী কুলশ্রী গ্রামের মোঃ কফিলউদ্দিন খোকন তালুকদার পেয়েছেন আনারস প্রতীক। নর পতিখিলা গ্রামের মোঃ মঞ্জুরুল হক খান টেলিফোন মার্কা এবং সৈয়দ মোস্তফা আশরাফ কামাল ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে আনারস ও নৌকার ভোট যুদ্ধের সম্ভাবনা আছে। সুখারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১০ টি কেন্দ্রের ৪৬ টি কক্ষে চলবে ভোট গ্রহণ। ১৩ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য ও ৩০ জন সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছে। তবে এ নির্বাচনে স্বরমুশিয়া ইউনিয়নে ৩ টি অস্থায়ী ভোট কক্ষ,বানিয়াজান ১ টি, দুওজ ইউনিয়নে ৩ টি সব মিলিয়ে ৭ টি অস্থায়ী ভোট কক্ষ থাকবে।
অপর দিকে জানা গেছে আসন্ন ১১ নভেম্বরের ইউপি নির্বাচনকে সামনে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় যারা আওয়ামীলীগের দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছে তাদেরকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। সাময়িক বহিস্কৃত আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন স্বরমুশিয়া ইউনিয়নে মোঃ জহিরুল ইসলাম সামরুজ, শুনই ইউনিয়নে ছানোয়ার উদ্দিন ছানু ও মোঃ তানভীর হাসান খান কামাল, বানিয়াজান ইউনিয়নে নিজাম ইয়ার খান,তেলি গাড়ী ইউনিয়নে সন্জুর রহমান,দুওজ ইউনিয়নের মোঃ কায়সার ইমরান বাবুল, মোঃ আসাদুজ্জামান টিপন,মোঃ শাহীন তালুকদার এবং কফিলউদ্দিনকে গত ২৯ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত পত্রে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।