আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে প্রাইমারি টির্চাস ট্রেনিং ইন্সটিটিউট( পিটিআই) নেত্রকোনা, বইছে উন্নয়নের জোয়ার,দীর্ঘ দিন যাবত জরাজীর্ণ ধ্বসে পড়া বিধ্বস্ত বাউন্ডারি, বহিরাগত বখাটে ও নেশাখোরদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল সীমাহীন উপদ্রব এবং নানা সমস্যাকাতর প্রতিষ্ঠানটিতে আধুনিকতা এবং পূর্নরুপ জৌলসে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন জাহানারা খাতুন ২০২০ সালের ১৯ শে জুলাই নেত্রকোনাপি টিআই সুপারিনটেনডেন্ট পদে যোগদান করে।
তিনি যোগদানের পর থেকে সততা, সৎ সাহস ও সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে পিটিআইটিকে দেশের একটি সেরা পিটিআইতে রুপান্তরের ব্রত নিয়ে অদম্যভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, ইতোমধ্যে তিনি স্থানীয় অর্থায়ন এবং সরকারি অর্থায়নে পিটিআই এর ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছেন, পিটিআই এর ভেতরে প্রবেশ করলেই মন জুড়িয়ে যায়। এখানে বিরাজ করছে মনোরম ও নিরাপদ পরিবেশ। প্রশাসনিক ও একাডেমিক সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে চলছে ১৮ মাস ব্যাপী ডিপিএড প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের ৬ বছর মেয়াদী শ্রেণি কার্যক্রম। পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি, পড়ালেখার মানের উন্নয়ন আশা ব্যঞ্জক হয়েছে।
তিনি যখন অত্র পিটিআইতে যোগদান করে, তখন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেনীর ছাত্র-ছাত্রীর ক্লাশে বসার মান খারাপ ছিল,যা তিনি একটি উন্নতমানের মানসম্পন্ন শ্রেণি কক্ষে রুপান্তর করেন,লেখা পড়ার মানও অনেকধাপ এগিয়ে নিয়েছেন,বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীদের এ প্লাস ও বৃত্তি প্রাপ্তির সংখ্যাও সন্তোষজনক। বিদ্যালয়টিকে আদর্শমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য তিনি রুটিন মোতাবেক ক্লাস গ্রহণ সহ-শিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম গ্রহণ ও ফ্রি বিশেষ কোচিং এর ব্যবস্থা করে । এ ছাড়াও ডিপিএড প্রশিক্ষণের মান ভাল এবং পাশের হার ১০০% (অধিকাংশই এ প্লাস প্রাপ্ত)।
যোগদানের পরেই তিনি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে যেমন ব্যক্তিগত উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান তৈরি এবং স্থানীয় অর্থায়নে বেস্টনী নির্মাণ, দৃষ্টিনন্দন শিশুপার্ক তৈরি, স্থানীয় অর্থায়নে পিটিআই অভ্যন্তরে প্রায় ১০০ গজ সংযোগ সড়ক স্থাপন, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য আকর্ষণীয় মিনি ‘শিশু পার্ক স্থাপন ও খেলাধুলার জন্য দোলনা, স্লিপার, বেলেন্স ন্তৈরী ও আধুনিকায়ন, পরিত্যক্ত ও খেলাধুলার অনুপযোগী মাঠ সবার জন্য উপযোগী করে তুলেছেন, বিভিন্ন জায়গায় মাটি ভরাট করে ফুল ও ফলজ বাগান তৈরি, সেমিনার কক্ষ সুসজ্জিত, অভিভাবক প্রশিক্ষণার্থী ও ছাত্রছাত্রীদের বসার জন্য ‘ছায়াতল ‘ ঘর ও বেঞ্চ এবং ছাউনি তৈরি, ৫২ র ভাষা আন্দোলনের শহীদের সম্মানে শহীদ মিনার, বকুল মঞ্চ তৈরী সহ সমস্ত প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন। তাছাড়া বিশেষ ভাবে আকর্ষনীয় ‘জ্ঞান দীপ্ত ‘ স্থাপন করেছেন। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জেরীন জান্নাত মাহিয়া ও ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সারিয়া আক্তার জারা জানায়, সুপার ম্যাডামের আন্তরিকতায় ও ভালবাসায় খেলাধুলা আর আনন্দে লেখাপড়া করতে করতে কখন স্কুল ছুটি হয় তারা তা টেরই পায়না।
১ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী মনিরা আনজুম এর অভিভাবক রিপা আক্তার জানালেন, তাদের সন্তানদের নেত্রকোনা পিটিআই-এর মত একটি প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করাতে পেরে তারা আনন্দিত, নিশ্চিন্ত।
পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী আছমা জানালেন, নেত্রকোনা পিটিআই-এ শিশুদের জন্য চালু পরীক্ষণ বিদ্যালয়টি যেন একটি আনন্দের ফুলবাগান। যেখানে প্রতিটি শিশু মনোযোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করে আর প্রশিক্ষণ নিতে আসা প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা তাদের পাঠদানের পদ্ধতি হাতে-কলমে শেখেন। পরিবেশটি অত্যন্ত মনোরম বলে জানান তারা।
ওই প্রতিষ্ঠানের চারু ও কারুকলা ইন্সট্রাক্টর মুহাম্মদ জিয়াউল হাসান জানান একজন দক্ষ শিক্ষক হিসাবে গড়ে উঠতে নেত্রকোনা পিটিআই একটি অনুকরণীয় ও অনন্য প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতেই মনটা ভরে যায়। প্রশিক্ষকমন্ডলী ও কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা তাদের উদ্বুদ্ধ করে।
নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ওবায়দুল্লাহ নেত্রকোনা পিটিআই একটি সেরা মানের প্রশিক্ষণায়তন যেখানে কোমলমতি শিশুদের শিক্ষাদানের মতন মহৎ কাজে নিয়োজিত শিক্ষকরা ১৮ মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে স্ব-স্ব বিদ্যালয়ে জ্ঞানের আলোকবর্তিকা জ্বালিয়ে থাকেন। দেশগড়ার কারিগর তৈরিতে নেত্রকোনা পিটিআই একটি মডেল হিসাবে ইতিমধ্যে পরিনত হচ্ছ।
নেত্রকোনা পিটিআই এর সুপারিন্টেনডেন্ট জাহানারা খাতুন জানান, আমি অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করছি, এছাড়াও শিক্ষার মানোন্নয়ন সহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড- নিয়ে সর্বদা চিন্তা-ভাবনা করি এবং তা বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি, আমি সকলের সার্বিক সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি যাহাতে জাতীয় পর্যায়ে নেত্রকোনা পিটিআই শ্রেষ্ঠ পিটি আই হিসাবে নির্বাচিত হতে পারে।