ভুয়া ও জাল চিঠি তৈরি করে গণমাধ্যম কর্মীদের বিভ্রান্ত ও অসদারচরণের অভিযোগে নেত্রকোনা মদনের উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সার্টিফিকেট সহকারী আব্দুল্লাহ আল বাপ্পি মজুমদারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে চিঠি প্রদান করা হয়েছে।
গত বুধবার জেলার ট্রেজারি অফিসার ও সহকারী কমিশনার অভিজিৎ চক্রবর্তী এ চিঠি ইস্যু করেন। আগামী( ১ সেপ্টেম্বর ) অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত দুজনকে শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
এরআগে গত( ৮জুলাই ২০২৪ )জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ও জেলার জেষ্ঠ্য সাংবাদিক কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন।
অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল বাপ্পি মজুমদারের পোস্টকৃত চিঠিতে, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) এবং গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা/কাবিখা) কর্মসূচীর আওতায় ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ের এবং বিশেষসহ সকল বরাদ্দের বিপরীতে প্রকল্প অনুমোদন, বাস্তবায়ন এবং অর্থ/খাদ্যশস্য উত্তোলনের সময়সীমা ৩১ জুলাই ২০২৪ খ্রি. তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার কথা উল্লেখ রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, গত ১ জুলাই ইস্যুকৃত চিঠির উপরে অতীব জরুরী লেখা অভিযুক্ত ব্যক্তি আব্দুল্লাহ আল বাপ্পি মজুমদার সাহেবের পোস্টকৃত চিঠিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ত্রাণ কর্মসূচি-২ অধিশাখার উপসচিব (ত্রাক-২) আবু সাইদ মো. কামালের স্বাক্ষর দেখানো হয়েছে। তিনি (বাপ্পী) এই চিঠিটি গত ৬ জুলাই মদন উপজেলার সাংবাদিকবৃন্দ হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করেন এবং কয়েক ঘন্টা পরে সেখান থেকে চিঠিটি সরিয়ে ফেলা হয়।
এরই মধ্যে মদনের গণমাধ্যমকর্মী ক্রিনশর্ট আমার কাছে প্রেরণ করলে চিঠির বিষয় নিয়ে আমার কাছে সন্দেহ পোষন হয়। পরে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মুহাম্মদ রুহুল আমীনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাকে অবগত এবং তার হোয়াটস অ্যাপ মোবাইল নাম্বারে চিঠিটি প্রেরণ করি। “চিঠিটি আমাদের মন্ত্রণালয়ের ইস্যু হয় নাই। ভুয়া চিঠি ভাই” এই কথা লিখে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হোয়াটস অ্যাপে বিষয়টি আমাকে অবগত করেন।
বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করি আমি নিজেই। আজ (বৃহস্পতিবার) জেলা প্রশাসন থেকে এক চিঠির মাধ্যমে আগামী ১ সেপ্টেম্বর শুনানিতে অংশগ্রহণ করার জন্য আমাকে অবগত করা হয়েছে। তাবে আমি যতটুকু জানি বাপ্পীর পোস্ট করা ঐচিঠিতে উল্লেখিত ২০২৩-২০২৪ কর্মসূচীগুলোর সকল কার্যক্রম গত জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন এবং গত ২৫ জুনের মধ্যে সমুদয় বিল নিস্পত্তি হবার কথা।
মদন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সার্টিফিকেট সহকারী আব্দুল্লাহ আল বাপ্পি মজুমদার জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে (ত্রাক কর্মসুচি-২ অধিশাখা) বাংলাদেশ সচিবালয়ের উপসচিব (ত্রাক-২) আবু সাঈদ মো. কামাল স্বাক্ষরিত একটি চিঠি মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস থেকে আমাকে দেওয়া হয়। পরে আমি এই চিঠিটা মদন উপজেলা সাংবাদিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করি। তবে আমি উপসচিবের স্বাক্ষর জাল করিনি।
মদন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (ত্রাক-২) আবু সাঈদ মো. কামালের স্বাক্ষরিত চিঠির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।