শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মারুফ।
ময়মনসিংহ জেলার কৃষি সমৃদ্ধ উপজেলা গৌরীপুরের উপজেলার (ইউএনও) হাসান মারুফ। আগস্ট ২০২০ এ যোগদানের পর থেকেই তিনি প্রাথমিক পর্যায়ে নানান শিক্ষাবান্ধব উদ্যোগের অনন্য নজির সৃস্টি করেছেন। তিনি শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রায় প্রতিদিনই প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। একটুখানি সুযোগ পেলেই ছুটে যান উপজেলার দূর দূরান্তের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে।ইতোমধ্যে তিনি “বঙ্গবন্ধুকে জানো” শীর্ষক উদ্যোগের মাধ্যমে উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে ছোটদের বঙ্গবন্ধু বই উপহার দিয়ে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন।দরিদ্র অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস, খাতা ও পেন্সিল উপহার প্রদান, বেসরকারি উদ্যোগে টুল বেঞ্চ প্রদানে উৎসাহিত করা, মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে উজ্জিবিত করা, খেলাধূলার ব্যবস্থাকরণে ক্রীড়া সামগ্রী প্রদান, শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করণে নিয়মিত মনিটরিং জোরদার, আইসিটি সামগ্রী বিতরণ, প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিব্ন্ধ প্রকাশ, মিড ডে মিল চালুর উদ্যোগ গ্রহণ, শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে শিক্ষকগণকে পরামর্শ, দিক-নির্দেশনার মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়ন , প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য আইসিটিসহ বিশেষ প্রশিক্ষণ আয়োজন ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে গৌরীপুরের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে অবদান রেখেছেন ইউএনও মারুফ।
তিনি নিজ উদ্যোগে উপজেলার সকল বিদ্যালয়ে কাব স্কাউট দল চালুর লক্ষ্যে বেসিক কোর্সের আয়োজন করেন। তার চেষ্টায় বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে শতভাগ প্রতিষ্ঠানে স্কাউট কার্যক্রম চালু আছে বলেও জানা গেছে। ইউএনও উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের কাজ সমাপ্ত করতে জমি,বাউন্ডারি সমস্যাসহ অনেক জটিলতা নিরসনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন বলে একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। সরকারি বরাদ্দের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি, তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে উপজেলার পশ্চিম ভালুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিধলা ইউনিয়নের নোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে অস্থায়ী শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করে দিয়েছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে এত কাজ করার অনুপ্রেরণা কোথা থেকে পেয়েছেন জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও হাসান মারুফ বলেন, “আমি নিজে চট্টগ্রাম জেলার কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহার আহসানিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছি। আমার মাও একজন শিক্ষিকা ছিলেন । তিনি আমাকে আমার কাজে প্রেরণা,উৎসাহ দেন যা আমাকে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে উজ্জীবিত করেছে।আমার নিকট আত্নীয়গণের মধ্যেও কয়েকজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন যা আমাকে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করার শক্তি যোগায়।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম বলেন তিনি ইতোমধ্যে তার একমাত্র মেয়েকে পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেশের প্রাথমিক শিক্ষায় অনন্য নজীর স্থাপন করেছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ে ইউএনওর উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন বলেন, “যোগদানের পর থেকেই স্যার যেভাবে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে বহুমুখী কাজ করে চলেছেন তাতে এ উপজেলার শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি আমরাও গর্বিত ও অনুপ্রাণিত।স্যারের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে আমি বিশ্বাস করি একদিন প্রাথমিক শিক্ষায় দেশের শ্রেষ্ঠ উপজেলায় পরিণত হবে গৌরীপুর।”
এছাড়া তিনি সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন জাতীয় দিবস আড়ম্বরপূর্ণভাবে উদযাপন নিশ্চিত করা, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা বিষয়ে প্রাথমিকের ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ তৈরির লক্ষ্যে কুইজসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের বিভিন্ন কর্মসূচি উৎসবমুখর পরিবেশে বাস্তবায়ন , বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট জাক-জমকপূর্ণভাবে আয়োজনসহ আরো অনেক ইতিবাচক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন। যা ইতোমধ্যে এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।