(হৃদয় রায় সজীব)
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় খেলার মাঠের বল বাড়িতে গিয়ে পড়াকে কেন্দ্র করে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এরআগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ কান্দাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়নের দক্ষিণ কান্দাপাড়া গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান আকন্দ (৫৫) ও তার ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম মুন্না (১৭)। হামলায় হাবিবুর রহমানের মাথার খুলি ভেঙে গুরুতর জখম হয়েছেন। তাকে প্রথমে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতি খারাপ দেখে দুপুরেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। এদিকে জাহিদুল ইসলামের মাথায় রামদার কুপে ১১ টি সেলাই লেগেছে। তাকে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আর গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, একই গ্রামের মো. এমদাদুল হক সলি (৩৮) ও মো. বাবুল মিয়া (৫৫)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দক্ষিণ কান্দাপাড়া গ্রামের আবু সাহিদের বসতবাড়ির পাশে একটি খেলার মাঠে স্থানীয় শিশুরা ফুটবল খেলছিল। খেলার একপর্যায়ে বল মাঠঘেঁষা বাড়িতে পড়ে গেলে প্রতিপক্ষের এমদাদুল, বাবুল, মোশারফ ও হেলিমসহ অন্যান্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় হাবিবুর রহমান আকন্দ ও তার ছেলে জাহিদুল ইসলাম মুন্না গুরুতর আহত হন। হাবিবুরের মাথার খুলি ভেঙে গুরুতর জখম হয়। আর জাহিদুলের মাথায় রামদার কুপে গুরুতর জখম হয়।
এদিকে প্রতিহত করতে গেলে হামলাকারী কয়েকজন আহত হয়। তারা স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন হাবিবুর রহমানের ভাই আবু সাহিদ।এতে একই গ্রামের মোশারফ মণ্ডল, এমদাদুল হক সলি, মো. বাবুল মিয়া, আ. হেলিম, আ. আমিন ও আবুল হাসে মণ্ডলসহ ৮ জনের নামউল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়। পরে রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত এমদাদুল ও বাবুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গুরুতর আহত হাবিবুর রহমানের ছেলে গণমাধ্যম কর্মী (দৈনিক কালবেলার জেলা প্রতিনিধি) রানা আকন্দ বলেন, তুচ্ছ একটি ঘটনায় আমার বাবা ও ছোট ভাইকে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। বাবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মাথার খুলি ভেঙে ভেতরে আঘাত লেগে রক্তপাত হয়েছে। তাকে প্রথমে নেত্রকোনা সদরে নিয়ে আসলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মমেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অবস্থার অবনতি দেখে ঢামেকে পাঠানো হয়েছে। এখন ঢামেকে রয়েছি। এখনো তিনি শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। আর ছোট ভাই জাহিদুলকে নেত্রকোনা সদর হাসাপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার মাথায় ১১টি সেলাই লেগেছে। এ ঘটনায় আমরা যথাযথ বিচার চাই।
কলমাকান্দা থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) লুৎফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আজ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। একজন আসামি পা ভাঙা অবস্থায় কলমাকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। সুস্থ হতে কয়দিন সময় লাগবে। তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষে হাবিবুর রহমান ও তার ছেলে গুরুতর জখম হয়েছেন। হাবিবুর রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। তবে অপর পক্ষের কয়েকজন কিছুটা আহত হয়েছেন। তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের পা ভেঙেছে।