পরনে সাদা শার্ট-কালো প্যান্ট, আর চোখে চশমা। এটা হয়তো ট্রাফিকের পোশাক নয়। কিন্তু স্বদিচ্ছা থাকলে পোশাকটাও যে কোনো বিষয় নয়। এটাই বুঝিয়ে দিলেন এক শিক্ষা কর্মকর্তা।
আমার গাড়ির পাশেই সিএনজিতে একজন অসুস্থ বৃদ্ধলোক দীর্ঘক্ষণ যানজটের কারণে কষ্ট পাচ্ছিলেন। দেখে খুব মর্মাহত হয়েছি তাই নিজেই নেমে পড়ি। এভাবেই হটাৎ ট্রাফিক হয়ে উঠার কারণ জানাচ্ছিলেন নেত্রকোণা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওবায়দুল্লাহ শাহীন।
৩১ মার্চ ( বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় ময়মনসিংহ শহরের সানকিপাড়া রেলক্রসিং মোড়ে চতুর্মুখী যানজটের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় যানজটে আটকে থাকা সাধারণ মানুষদের।
দীর্ঘক্ষণ ধরে একই জায়গায় আটকে থাকে অটো, রিক্সা, বাইক, সিএনজি, প্রাইভেট কারসহ নানা যানবাহন। ক্রমশ বেড়েই চলছিল যানজটের যাতনা।
সে সময় নিজ তাগিদে এগিয়ে এসে অনেক চেষ্টায় এই যানজট হ্রাস করতে সমর্থ হোন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওবায়দুল্লাহ শাহীন।
এ কাজে তিনি সাধারণ মানুষের প্রশংসাও কুড়িয়েছেন বেশ। সিএনজি চালক মোঃ সোহেল বলেন, এখানে ট্রাফিক থাকলে ভালো হইতো। উনি না থাকলে আরও অনেকক্ষণ রোগী নিয়ে আটকে থাকতাম। স্যারকে ধন্যবাদ।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবু শোয়েব জানান, লম্বা সময় ধরে রিক্সায় বসে আছি। একজন শিক্ষা কর্মকর্তা হয়েও উনি যে কাজ করেছেন সেটা শিক্ষনীয়। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের দায়বদ্ধতা আছে বুঝতে পারলাম।
সিএনজিতে থাকা অসুস্থ বয়োবৃদ্ধ জানান, এই জ্যামে আটকা পড়ে জ্ঞান হারাবার মতো অবস্থা হয়েছিল। হেটে যাবারও শক্তি নেই। স্যারের জন্য বেঁচে গেলাম। কিন্তু অন্যসময় কি হয় কে জানে।
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওবায়দুল্লাহ শাহীন বলেন, আমি নেত্রকোণা জেলার দায়িত্বে আছি। পরিবার ময়মনসিংহ থাকার সুবাদে মাঝে মাঝে আসা হয়। কিন্তু এই সব সমস্যায় কাউকে তো এগিয়ে আসতেই হবে। নয়তো সমাধান পাওয়া কঠিন। নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই চেষ্টা করেছি। আশা করছি এভাবে অনেকেই এগিয়ে আসবে।
সমাজকর্মী নিলম বিশ্বাস রাতুল জানান, এমন একজন কর্মকর্তা আমাদের জেলায় আছেন বিষয়টা আনন্দের। ট্রাফিক বিভাগও যথেষ্ট অনুপ্রাণিত হবে যে সকলেই তাদের পাশে আছে সহযোগী হিসেবে। এটাই তার বড় উদাহরণ।