২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত গত ১ বছরে নেত্রকোনা জেলায় ২৫১টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশিরভাগ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সড়ক দুর্ঘটনায়। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মধ্যে রয়েছে হত্যা, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা, বিষপানে আত্মহত্যা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু ও পানিতে ডুবে মৃত্যু ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা নেত্রকোনায় সংরক্ষণ না হওয়ায় তার পরিসংখ্যান দেয়া সম্ভব হয়নি।
সচেতন বিশ্লেষকদের মতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়েও অনেক বেশি। কারণ অনেক সময় নিভৃতপল্লী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে ডুবে মৃত্যু, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কেউ মারা গেলে পুলিশী হয়রানী কিংবা ময়না তদন্তে কাঁটা ছেড়ার ভয়ে প্রশাসনকে না জানিয়ে অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি স্বাপেক্ষে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করায় সরকারি হিসেবে তা নথিভূক্ত হয় না।
নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্র মতে, নেত্রকোনা জেলায় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ১৩টি, ফেব্রæয়ারি মাসে ১৯টি, মার্চ মাসে ১৯টি, এপ্রিল মাসে ২৫টি, মে মাসে ২৫টি, জুন মাসে ২২টি, জুলাই মাসে ২৭টি, আগস্ট মাসে ২১টি, সেপ্টেম্বর মাসে ২১টি, আক্টোবর মাসে ১৯টি, নভেম্বর মাসে ২৩টি ও ডিসেম্বর মাসে ১৬টিসহ মোট ২৫১টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার, সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে সবার আগে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিবহন মালিক সমিতি ও জেলা মোটরযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের উদ্যোগে সব ধরণের যানবাহন চালকদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ গাড়ি চালক তৈরী করার পাশাপাশি রাস্তায় কিভাবে গাড়ি চালাতে হয়, সে সব নিয়ম কানুন সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক, অদক্ষ এবং মাদকাসক্ত অবস্থায় কেউ যেন গাড়ি না চালায় এবং ট্রাফিক আইন যাতে সবাই মেনে চলে তার জন্য ট্রাফিক বিভাগকে আরো সততা ও আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে হবে।
নেত্রকোনা বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুর রশিদ বলেন, আমরা বাস ট্রাক চালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ চালক হেলপার ও পথচারীদেরকে স্ব স্ব স্থান থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
পুলিশ সুপার মোঃ ফয়েজ আহমেদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ কল্পে নিরাপদ সড়ক আইন বাস্তবায়নে আমরা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সড়ক দুঘটনা রোধ ও ট্রাফিক আইন মেনে চলতে চালক, হেলপার ও পথচারীদের মাঝে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। পুলিশ বিভাগ সড়ক দুর্ঘটনার পরপরই মামলা নিচ্ছে এবং অভিযুক্ত চালকদেরকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা করছে।