দলের দুর্দিনে পাশে থেকে লড়াই করে গেছেন, সেই সাথে তৈরী করেছেন অসংখ্য নেতাকর্মী। নামের সাথে জড়িয়ে আছে ত্যাগী নামক তকমাটাও।
একাধারে ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের নির্বাচিত সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তবুও নিজেকে নেতার কাতারে রাখতে নারাজ শফিক আহম্মেদ খান বাবু। জানালেন দলের কর্মী পরিচয় দিলেই পান পরম আত্মতৃপ্তি।
এর ব্যাখাও দিলেন বেশ সাবলীলভাবে। একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কর্মী ছাড়া নেতা মূল্যহীন। কর্মীরাই মূলত নেতাদের জন্মদাতা। নিবেদিত কর্মী ছাড়া একজন মানুষ কখনোই পরিপূর্ণ নেতা হয়ে উঠতে পারেন না। তাই নিজেকে কর্মী পরিচয় দিলেই পরম সুখ অনুভব করি।
অতীতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বললেন, দলের দুর্দিনে পাশে থেকে লড়াই করার মতো সৌভাগ্য সবার হয় না। মুজিব আদর্শ বুকে লালন করে দুঃসময়ে নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার জন্য যারা সংগ্রাম করে গর্বিত অংশীদার হয়েছেন তাদের মধ্যে আমিও একজন। আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান, ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করি। ৯১ থেকে ৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খুব কঠিন সময় পার করেছি।
বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় জামাত বিএনপি এর নির্যাতন সহ্য করে কারাবরণ করেছি বারবার, দীর্ঘদিন পরিবারবিহীন ফেরারি জীবন অতিবাহিত হওয়ার অভিজ্ঞতার কথাও জানালেন । কৈশোরের সোনালী সময় কেটেছে অনিশ্চিয়তা আর হতাশায়। তবু মুজিব আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়নি।
এমনকি সন্ত্রাসী বাবরের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে সমগ্র জেলায় কাজ করেছি।
মাননীয় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু কাকার নেতৃত্বে আমি রাজপথে শতভাগ আস্থাশীল ভূমিকা পালন করেছি দলের দুঃসময়ে।
আক্ষেপ ভরা কন্ঠে তিনি জানান, আমি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচন করেছি ও সদস্য পদেও দায়িত্ব পালন করেছি। আমার প্রবল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও সেদিন অবিচারের স্বীকার হয়েছিলাম যার একমাত্র সাক্ষী রাজপথ।
উল্লেখ্য সম্মেলনের দিন প্রথম অধিবেশনের পর চারটা কমিটির অনুমোদন হয়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো জেলায় হয়নি, এখানে নেত্রকোণা জেলা ছাত্রলীগের ভোট ছিল ১০৯, বাকি ১২টি থানায় ২৫ জন করে কাউন্সিলর সংযুক্ত হলে মোট ভোট দাঁড়ায় জেলা কমিটি সহ ৪০৯ ভোট। এর মধ্যে চারটি কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয় সম্মেলন স্থলে, প্রথম অধিবেশনের পর যা নিয়ম বহির্ভূত। এমনকি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দেওয়া কেন্দুয়া থানা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত না করেই সেখানে নতুন আহবায়ক কমিটি দেয়া হয়। চার ইউনিটের মধ্যে কেন্দুয়া থানা ছাত্রলীগ নিয়ে সারা জেলায় সমালোচনার ঝড় হয়। এই সময়ে প্রথম আলোসহ বেশ কিছু জাতীয় পত্রিকায় ছাপা হয় নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগ সম্মেলনের অনিয়মের কথা।
এমনকি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েও ফের অবিচারের স্বীকার হতে হয়েছে আমাকে।
জাতির পিতা সারাজীবন যেই আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে গেছেন। সবশেষ সেই আওয়ামী রাজনীতিতে অবদান রাখতে চাই। যেমনটি রেখেছিলাম ছাত্ররাজনীতিতে।
উল্লেখ্য শফিক আহম্মেদ খান বাবু আসন্ন সম্মেলনে নেত্রকোণা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন। জেলার সকল ছাত্র ও যুবসমাজ এই ত্যাগী নেতার সমর্থনে একত্রিত হয়েছে।
সকলের দোয়া ও সমর্থনে এই পৌর আওয়ামী লীগের দায়িত্বের ভাড় তার উপরই অর্পিত করবেন নীতি নির্ধারকরা, এমনটাই বিশ্বাস করেন শফিক আহম্মেদ খান বাবু।