যেখানে লালন বলেছিলেন সময় গেলে নাকি সাধন হবে না। সেখানে আমার দেশ অসময়ে সাধনে ব্যস্ত।
প্রতি বছর বাঁধ ভাঙ্গার পর প্রশাসন থেকে শুরু করে দায়িত্বরত দপ্তর গুলোর যে তোরজোড় দেখা যায়। তা যদি বাঁধ নির্মাণের সময় করা যেতো তাহলে বাঁধগুলোও টিকে থাকতো।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোনো ঘটনা ঘটার পূর্বে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে উঠেনা। কিন্তু ঘটে গেলে যেন কারোরই আর দায় থাকে না। আবার কারোও কাছে ভাঙ্গা বাঁধ যেন ফটোসেশান করার উৎকৃষ্ট জায়গা।
অথচ সময়ে নজরদারির অভাবেই গোটা কৃষক সমাজে আজ দীর্ঘশ্বাস আর উৎকণ্ঠা। সারাবছরের সকল আশা আকাঙ্ক্ষার সমাপ্তি যে এখানেই।
বোরো ধান কিছুটা নষ্ট হলেও অনেকাংশ রক্ষা করা যাবে এই ভেবে হয়তো স্বস্তিতে ছিলো কিছু সংখ্যক কৃষক পরিবার। কিন্তু পুনরায় প্রবল বৃষ্টিপাতে পানি বৃদ্ধি হওয়ায় সেই আশাও যেন গুরেবালি।
প্রতি বছর ফসল রক্ষা করার জন্য সরকার যে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে তার কতটুকু কাজে লাগছে! এই হিসেব নেওয়ার সময় এসে গেছে।
ফসল রক্ষার জন্য বাঁধ দিয়ে যদি ফসলই রক্ষা করা না যায়। তবে এই বাঁধ নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তা কি?
হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ গুলোকে জনস্বার্থে নেওয়া হয়নি বিশেষ নজরদারিতে। তবে এখন বাঁধগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং দৃশ্যমান। কিন্তু সময় হারিয়ে নজর দেওয়াটা বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ।
সরকার শক্ত বাঁধ নির্মাণের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেও পেটুকদের পেট ভরাতে পারেনি। এর প্রমাণ তাদের দায়সারা মনোভাব। কাজের প্রতি উনাদের শ্রদ্ধা-ভক্তি থাকলে হয়তো পরিস্থিতি এর উল্টো হতো।
গোয়াল ঘরে থাকা ছেলেটা একশো টাকার বিনিময়ে পুলিশে চাকুরী পেয়ে আনন্দ অশ্রু ঝরিয়েছিল। অন্যদিকে কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েও আটকানো গেলো না কৃষকের কান্না। তবে কোন স্বচ্ছতার উদাহরণ টানবে পানি উন্নয়ন বোর্ড!
বছরের পর বছর কৃষকের পেটে লাথি মেরে, নিজেদের স্বার্থ নেয় হাসিল করে। দেশ উন্নয়নের মহাসড়ক তৈরী করতে পারলেও তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে না টেকসই বাঁধ।
এর নেপথ্য কারণ, অদৃশ্য সিন্ডিকেট ও পাউবো’র ভূমিকা নিয়ে আসছে ২য় পর্ব……..