শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :

মদনে অবৈধ ৫ ইটভাটায় হুমকিতে কৃষি জমি।

মোঃ আংগুর রহমান ভূইয়া
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ২০১ বার পড়া হয়েছে

নেত্রকোনার মদন উপজেলায় ৫টি ইটভাটা পুরানো হচ্ছে ইট। তবে একটি ভাটারও লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র।

প্রতিটি ইট ভাটাই স্থাপন করা হয়েছে গ্রামের ভেতর ফসলি জমিতে। অধিকাংশ ইটভাটা রয়েছে বাজার মাদ্রাসা অনেকদিন বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকা।

স্থানীয় প্রভাবশালীরা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন না মেনে সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এবং স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে এসব অবৈধ ভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ইট বাটার মালিকরা। ইটের লরি গাড়ির অদক্ষ ড্রাইভার এর রাস্তার ধুলাবালি উড়িয়ে গাড়ি টানায় এতে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

চরম হুমকিতে রয়েছে জনস্বাস্থ্য। এছাড়া এসব ভাটায় ইট প্রস্তুতের জন্য কৃষিজমির উর্বর মাটি (টপসয়েল) ব্যবহার করার ফলে কমছে ফসলি কৃষি জমির উৎপাদন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ৫টি ইটভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালীরা।

মদন তুষার ব্রিকসের চতুরপাশে রয়েছে ফসলি শস্য আবাদী জমি, কৃষক বঞ্চিত হচ্ছে ফসল থেকে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, কুলিয়াটি গ্রামের এক কৃষক নাম বলতে অনিচ্ছুক সে জানায় তুষার ব্রিকস নামের ইট কলাটা যখন ছিলনা। আমাদের জমি কাটা প্রতি সাত থেকে আট মন ধরে জমিতে ধান হইত। এখন চার থেকে পাঁচ মন ধান হয় প্রতি কাটা জমিতে। ইট কলার আগুনের গরমের আমাদের ফসলী জমির ফসল কমে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে তুষার ব্রিকসের প্রোপাইটর মোঃ পলাশ মিয়ার সাথে ইটভাটার লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরে ছাড়পত্র এবং লাইসেন্স আছে কি না উপজেলা প্রশাসন দেখবে সাংবাদিকদের কেন দেখাবো কেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নাই। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের সংলিষ্ঠ অফিস কর্তৃপকে ম্যানেজ করে আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

উপজেলার কাটাইটাল বাজারের পাশে রয়েছে আব্দুল ওয়াহেদ ব্রিকস একটি বাণিজ্যিক এলাকা চতুর্দিকে রয়েছে আবাসিক গ্রাম মাদ্রাসা বাজার এবং শস্য জমি ইটভাটার ধুলাবালি আগুনের ধোঁয়া এবং ইটের লরি গাড়ির ধুলাবালির জনজীবন বিপর্যস্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উক্ত এলাকার মানুষের জীবন যাপন।
কাইটাইল বাজারে উত্তর পাশেই রয়েছে দেওয়ান আকিক ব্রিকস ।

কেন্দুয়া মদনের রাস্তা বারড়ি বাজারের পাশেই রয়েছে আরেক জনজীবন কষ্টের সাদেক ব্রিকস কয়লার পুরা গন্ধে এবং ইটের লরি গাড়ি ধুলাবালির রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করায় বাজারবাসী ও যাত্রীদের কষ্টের সীমা নেই।
এতে করে শিশুদের সর্দি-কাশি ও মানুষের বিভিন্ন রোগ ব্যাধি বাড়ছে এবং উক্ত এলাকার কৃষকের জমিতে উৎপাদিত ফসল কমে যাচ্ছে।
প্রভাবশালীদের অবৈধভাবে ইটভাটার কারণে।

মদন নেত্রকোনার রাস্তার জয়পাশা গ্রামের হাওরে রয়েছে জবেদা ব্রিকস উক্ত ইট ভাটার ১০০ গজের ভিতরে চতুর্থ পাশেই রয়েছে ধানের ফসলের আবাদী জমি। নাই পরিবেশ অধিদপ্তরের চারপত্র অবৈধ ইট ভাটের কারণে কৃষকের জমিতে কৃষি ফলন কমে যাচ্ছে, কৃষক বঞ্চিত হচ্ছে অধিক কৃষি ফলন থেকে।

মদন উপজেলার ইটভাটাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ভাটাতেই পুরোদমে ইট প্রস্তুতের কাজ চলছে। সব ইটভাটায় শুরু হয়েছে ইট পোড়ানোর কাজ। খোলা আকাশের নিচে যত্রতত্র ভাবে রাখা হয়েছে কয়লা। নিয়ম না থাকলেও প্রত্যেকটি ভাটাতেই পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ইটভাটাগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে দেখা ১৮ বছরের নিচের অনেক শিশুদেরও। এসব অনুমোদনহীন ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া গ্রামের নিটোল পরিবেশ আর মানবদেহের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। ভয়ানক বিষয় হলো কয়েকটি ভাটা রয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই। অপরিকল্পিত ইটভাটা স্থাপনের ফলে গ্রামের বাতাসে অক্সিজেন কমে গিয়ে বাড়ছে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইডের উপাদান।মদনের একটা ভয়ানক পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে অতি সত্তর যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি গ্রামবাসী।

নেত্রকোনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আবু সাঈদ বলেন, মদন উপজেলার তিনটি ইটভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে। বাকি সব ভাটাই অবৈধ। ২০২১ সালের শেষের দিক থেকে শুরু করে ২০২২ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এসব ভাটা বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়। সবশেষে পর্যায়ক্রমে সবকটি ভাটার বিরুদ্ধেই আদালতে মামলা করা হয়। মামলাগুলো চলমান অবস্থায় রয়েছে এবং এসব ভাটার বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান তিনি বলেন, ইটভাটাগুলোতে ফসলি জমির ওপরের অংশের মাটি (টপসয়েল) কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে জমির উর্বরতা হারাচ্ছে এবং কৃষিজমিরও উৎপাদন কমে যাচ্ছে। তাই যেসব ইটভাটা অবৈধভাবে চালাচ্ছে তা বন্ধ করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ শাহ আলম মিয়া তিনি বলেন, এসব ইটভাটায় অচিরেই অভিযান পরিচালনা করা হবে
অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2021 khobornetrokona
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin