ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলায় শনিবার (২৪ আগষ্ট) ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব এক গণঅভ্যুত্থানে কতৃত্ববাদী আওয়ামী শাসনের অবসানের পর, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীন জাতীয় জীবনের এক যুগ-সন্ধিক্ষণে, আমূল সংস্কারের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের দাবীতে সারাদেশে একযোগে মানববন্ধনের অংশ হিসেবে সুজন_সুশানের জন্য নাগরিক, গৌরীপুর উপজেলা কমিটি শনিবার সকাল ১১টায় কালীখলাস্থ কৃষ্ণচূড়া চত্বরে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত করেছে।
এ কর্মসূচিতে গৌরীপুরের সুজন সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল হাসনাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তসলিম সাখাওয়াতের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সুজন কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য মানবাধিকার কর্মী একরাম হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় ছাত্র নেতা এনামূল হাসান অনয়, শিক্ষক পলাশ মাজহার, প্রফেসর মোশাররফ হোসেন, শিক্ষক উজ্জ্বল রবি দাস, ক্ষেতমজুর নেতা আব্দুল লতিফ, শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম প্রমূখ।
সভায় বক্তারা, রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট উদাত্ত আহ্বান জানান। বক্তারা আরও আহ্বান জানান,
হত্যা, সহিংসতা, লুটপাট ইত্যাদিতে জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে হত্যা ও সহিংসতায় জড়িতদের অতিসত্বর বিচারের আওতায় আনা,
◑ আন্দোলনে নিহতদের তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা,
◑ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা,
◑ পরমত সহিষ্ণুতার বার্তা ও বৈচিত্র্যতার মাঝে ঐক্যের চেতনা ছড়িয়ে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা,
◑ সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক ঐক্যমত্য তৈরি করে সংবিধানের গণতান্ত্রিক চেতনা পরিপন্থী ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার করা এবং প্রধানমন্ত্রী পদের টার্ম লিমিট নির্ধারণ করা,
◑ নো-ভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তন করে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা এবং সৎ, যোগ্য, নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা,
◑ ঋণখেলাপীদের তালিকা প্রকাশ করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির যথাযথ বাস্তবায়ন করাসহ বিশেষ ট্রাইবুনালে দুর্নীতিবাজদের বিচার নিশ্চিত করা,
◑ গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের অবসান ও আদর্শভিত্তিক জনকল্যাণমুখী রাজনীতির পরিবেশ তৈরি করা,
◑ তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
বক্তারা, সংঘাত নয় ঐক্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে, শোষণহীন মানবিক রাষ্ট্রের সুতীব্র আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন। মানববন্ধনের শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সকল শহীদদের প্রতি এবং চলমান ভয়াবহ বন্যায় নিহত সকলের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন এবং এই দুর্যোগে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্গতদের পাশে দাড়াবার প্রয়াসের ভুয়সী প্রশংসা করেন।