ইতিহাস ঐতিহ্যের গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত নেত্রকোণা জেলা। এ জেলার দশটি উপজেলার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী একটি উপজেলা কেন্দুয়া। নেত্রকোণা জেলার লাইটপোষ্ট হিসেবে খ্যাত কেন্দুয়া উপজেলা। এ উপজেলার প্রসিদ্ধ একটি গ্রাম চিরাং ইউনিয়নের বাট্টা। অন্যায়ের সাথে আপোষহীন নেতা ফরিদ আহম্মেদ বাট্টা মধ্যপাড়া গ্রামে ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা প্রয়াত শিক্ষক শামছুদ্দীন আহম্মেদ,মাতা সুফিয়া আক্তার । ৫ ভাই ৫ বোনের মধ্যে ফরিদ আহম্মেদ তৃতীয়। কেন্দুয়া মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনার হাতে খড়ি হয়। কেন্দুয়া জয়হরি সরকারী স্প্রাই সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯০ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন কেন্দুয়া ডিগ্রী কলেজে। কেন্দুয়া ডিগ্রী (বর্তমানে সরকারী) কলেজ থেকে ১৯৯২ সালে এইচ এস সি পাশ করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে স্বৈরশাসক পতনের জন্য ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সম্মুখ সারিতে থেকে মিটিং মিছিলে অংশ গ্রহণ করেন ফরিদ আহম্মেদ। তৎকালীন সময়ে ছাত্রদল করার কারণে তখনকার সময়ের কেন্দুয়া ডিগ্রী কলেজের প্রিন্সিপাল জীবন কৃষ্ণ সাহা রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ফরিদ আহম্মেদ বিএ ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে চরম বিরোধীতা করেন। অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে তিনি বিএ ভর্তি হন এবং এ কলেজ থেকেই বিএ পাস করেন। রাজনৈতিক জীবনে ফরিদ আহম্মেদ কেন্দুয়া ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মনোনীত হন। ১৯৯৫ সালে কেন্দুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হয় এবং পরবর্তীতে পুনরায় ছাত্রদলের আহবায়ক নির্বাচিত হয়ে দলের জন্য নিবেদিত হয়ে অগ্রণীয় ভূমিকা পালন করেন। পরে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
একান্ত সাক্ষাতকারে ফরিদ আহমেদ জানান,২০১৩ সালে আহবায়ক মনোনীত হওয়ার পর রাজনৈতিক রোষানলে অন্যায়ভাবে তার পদটি স্থগিত করা হয়। তিনি আরও বলেন পরবর্তীতে দলের দুঃসময়ে শ্রদ্ধাভাজন শামীম,সোহাগ,রাসেল এই তিনজনের আন্তরিক সহযোগিতায় হাবীব উন নবী খান সোহেল সাহেবের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কেন্দুয়া উপজেলা স্বেচছাসেবক দলের সভাপতি মনোনীত হই এবং অদ্যাবধি পর্যন্ত আহবায়কের দায়িত্বে আছি। এছাড়াও তিনি বলেন-এক সময় জিয়া পরিষদের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।
আপাষহীন সংগ্রামী নেতা ফরিদ আহম্মেদ দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে ১০ টি মামলার আসামী হয়েছেন। কারাবরণ করেছেন ৩ বার। এছাড়াও কলেজ জীবনে বহুবার থানা হাজতে আটক করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও তিনি জানান-আওয়ামী বাকশালীদের হাতে বহুবার নির্যাতিত হয়েছেন। বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় আসামী হয়ে কেন্দুয়া ছেড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফেরারী জীবন যাপন করতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন-২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের সময় কেন্দুয়া থানা হেফাজতে এক সাথে ১৬ জন জনকে একটি কক্ষে ৪ দিন নাগাদ আটক করে রেখে অমানবিক আচরণ করে,যা কোনদিন ভুলবার নয়।
সাক্ষাতকারের একপর্যায়ে ফরিদ আহম্মেদ আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন-এত বছর রাজনীতি করে দলের জন্য অনেক ত্যাগ তীতিক্ষা করার পরও আজ পর্যন্ত কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য হতে না পারার দুঃখ আমার রয়েই গেলো।
ফরিদ আহম্মেদ আগামী প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন-দলকে ভালবেসে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। তেলবাজীর রাজনীতি না করে,দলের আদর্শ হৃদয়ে লালন করে জনমানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে দলকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করে যেতে হবে।
সাক্ষাতকারের পরিশেষে ফরিদ আহম্মেদ বলেন-জীবনে যতদিন বেঁচে আছি ততদিন শহীদ জিয়ার আদর্শ নিয়ে আগামীদিনে কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যেতে চাই। সেই সাথে আজীবন দলের জন্য নিবেদিত প্রাণে দলকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করতে চাই।