শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:৪৯ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
কোটা সংস্কারের দাবিতে মদনে বিক্ষোভ। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক। নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশের অভিযান ঃ দুইটি চোরাই গরু একটি ট্রাকসহ এক চোর আটক নেত্রকোনার কলমাকান্দায় পাহাড়ী ঢলের পানিতে ভেসে গেছে স্কুল শিক্ষার্থী নেত্রকোণার কেন্দুুয়ায় জুয়ার আসরে পুলিশের অভিযানে আটক-৮ ঃ নদীতে ঝাঁপ দিয়ে এক জুয়ারী নিখোঁজ মদনে সুমনখালী খাল খননে এলাকাবাসীর দাবি। টাকা আত্নসাত মামলায় নেত্রকোনায় মাদ্রাসার হিসাব রক্ষক গ্রেপ্তার ঃ কারাগারে প্রেরণ ময়মনসিংহ রেঞ্জের মাসিক অপরাধ সভায় শেষ্ঠ ওসি নেত্রকোনা মডেল থানার আবুল কালাম সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসান বলেন গাছে গাছে সবুজ দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। নির্বাহী কর্মকর্তার পরিকল্পনায় পাল্টে গেছে মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের দৃশ্যপট মিথ্যা সংবাদ করার প্রতিবাদের সংবাদ সম্মেলন

কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রচেষ্টায় একটি প্রয়াস ও বাস্তবায়ন

মাঈন উদ্দিন সরকার রয়েল।
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ১৮ জুন, ২০২১
  • ৩০২ বার পড়া হয়েছে
 নেত্রকোনার জেলার ঐতিহ্যবাহী কেন্দুয়া উপজেলা। এ উপজেলার বর্তমান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈন উদ্দিন খন্দকার। তিনি এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিটি কাজ তিনি শতভাগ স্বচ্ছতার মাধ্যমে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছেন। মানবিক গুণাগুন সম্পন্ন এই কর্মকর্তা প্রত্যেকের কর্মের যথাযথ মূল্যায়ন করতে জানেন। এ উপজেলায় তাঁর কর্মজীবনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এই এক বছরে তিনি নিজের দায়িত্বপালনে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। এমনকি একজন অভিভাবক হিসেবে সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মের প্রতি রেখেছেন সুতীক্ষ্ণ দৃষ্টি। দায়িত্ব ও কর্তব্যকাজে নজরদারীসহ দৃষ্টিভঙ্গিও ছিল বিদ্যমান। ছিল নিবিড় পর্যবেক্ষণ। প্রত্যেকের বিগত এক বছরের কাজের প্রকৃত গুণসমূহ চিহ্নিত করণ করেছেন তিনি। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাজের মূল্যায়নে উৎসাহ যোগানোর লক্ষ্যে ক্রেষ্ট প্রদানের আয়োজন করেছেন। এমন বিষয় নিঃসন্দেহে  প্রশংসার দাবীদার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন খন্দকারের  তীক্ষ দৃষ্টি ও অগাধ জ্ঞানের আড়াল হয় নি গাড়ী চালক। গাড়ী চালককেও ব্যতীক্রমী পুরস্কারের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করে সম্মানিত করেছে । সবকিছু মিলিয়ে সকল প্রশংসাই যেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ঝুড়িকে কানায় কানায় পূর্ণ করেছে।  এক মানবিক গুণের সমাহারে সমৃদ্ধ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ফেসবুক আইডির টাইম লাইন থেকে ইউএনও মঈন উদ্দিন খন্দকারের  একটি লেখা হুবুহু নিন্মে তুলে ধরা হল-
* ২১ জুন ২০২০ এ কেন্দুয়া উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করি। প্রায় ১ বছর উপজেলার সম্মানীত জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারিদের নিয়ে কাজ করেছি। সরকারি সিস্টেম, উপজেলা লেভেলের বাস্তবতা সবকিছুর সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হয় সকলকে। সে হিসেবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণও বিভিন্ন অফিসের সাথে সমন্বয় রক্ষা করে চলেন। কখনো কখনো ইচ্ছা/আন্তরিকতা থাকলেও আইনি কাঠামো কিংবা নানাবিধ সমীকরণে সমন্বয় বাধাগ্রস্থ হয়, তথাপিও অফিসারগণ কিংবা জনপ্রতিনিধিগণ চেষ্টা করেন আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে সরকারি কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। নিজ নিজ দপ্তরের কাজ সামলিয়ে কেন্দুয়া উপজেলার অফিসারদের মধ্যে একটি ভালো টিম স্পিরিট লক্ষ করেছি। নানাবিধ মনস্তাত্ত্বিক ও ব্যস্থতার চাপে হয়তো নিজের মেধা ও মননের সবটুকু দিতে পারেন না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারিগণের মধ্যে যাতে উদ্ভাবনী কাজ করার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় এবং যাঁরা ভালো কাজ করেন তাঁদের মধ্যে যাতে উৎসাহ বৃদ্ধি পায় সে লক্ষে আমি চেষ্টা করেছি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে উপজেলার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের কর্মরতদের তাঁদের কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ সম্মানীত করতে। মান্যবর জেলা প্রশাসক, নেত্রকোণা জনাব কাজি মোঃ আবদুর রহমান মহোদয়ের উপস্থিতিতে সকলকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। তাই ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য কেন্দুয়া উপজেলার বিভিন্ন কর্মকর্তা/কর্মচারিগণের মধ্যে আমরা যাদের সম্মানীত করেছি তাঁরা হলেন-
১। সেরা উদ্যোক্তা:
জনাব মো: নাছির আহমেদ, উদ্যোক্তা, গড়াডোবা ইউনিয়ন পরিষদ। ২০০৮ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর সরকারের কার্যকরী একটি উদ্যোগ ছিলো ইউনিয়নে ইউনিয়নে উদ্যোক্তা সৃষ্টি। প্রাথমিকভাবে তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে এটুআইয়ের সাথে কাজ করেছে। সরকারি ওয়েবপোর্টালগুলি নির্মানে তাদের অনেকের অবদান ছিলো উল্লেখযোগ্য। ফলে তাদের মাঝে তৈরি হয়েছে বিশেষ দক্ষতা। তাই সরকারের সাথে এখন প্রত্যক্ষ যোগাযোগ না থাকলেও পরোক্ষভাবে তারা সরকারি দপ্তরগুলির ডিজিজাল সেবা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে, পাশাপাশি সেবাগ্রহিতাদের ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেবা প্রাপ্তির সুবিধা তৈরি করে দিচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন জিটুপি কার্যক্রমসহ যেকোন ডাটাবেইজ বিনির্মাণে তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। কেন্দুয়া উপজেলার উদ্যোক্তাদের মধ্যে জনাব নাছির ছিলেন ব্যতিক্রম। যে কোন কাজে তার পারফরম্যান্স ছিলো অসাধারণ। তাকে দায়িত্ব দিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি সরকারি দপ্তরগুলির কাজ উঠিয়ে দিতেন। তার ইউনিয়নে যে কোন সেবার অনলাইন আবেদিনকারীর সংখ্যা থাকে সবচেয়ে বেশি।
২। সেরা গ্রাম পুলিশ:
জনাব মো: গোলেছ মিয়া দফাদার, কান্দিউড়া ইউনিয়ন, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। দ্রুত সাড়া প্রদানকারী এবং কমিউনিকেটিভ এই গ্রাম পুলিশ সর্বদাই সরকারি দায়িত্ব পালনে একনিষ্ঠতার পরিচয় দিয়েছেন।
৩। সেরা অফিস সহকারী:
জনাব মো: শাহীন আলম, অফিস সহকারী, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। আমি যোগদানের পর থেকে প্রতিদিনই প্রায় গড়ে ১০ ঘণ্টা করে কাজ করেছেন, কাজ করতে হয়ে উইকেন্ডেও। চাকরিতে নতুন, কিন্তু ইচ্ছাশক্তি আর জানার আকাঙ্ক্ষা প্রবল। মাঝে মাঝে নিজেরই খারাপ লাগে এতো দায়িত্ব তাকে কেনো দিই। প্রশাসনের চাকরিটা অন্য অনেক চাকরির মতো ৯টা ৫টা চাকরি না। অথচ সুযোগ সুবিধা অন্য সকল অফিস সহকারীর মতোই। করোনাকালেও প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। সকল অফিসের সাথে যোগাযোগ করার সক্ষমতাও চমৎকার।
৪। সেরা ইউনিয়ন পরিষদ সচিব:
জনাব মো: মো: আনোয়ার হোসেন, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব, সান্দিকোনা, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। যোগাযোগ ও কাজে দক্ষ, রিপোর্ট রিটার্ন দ্রুততম সময়ে প্রেরণ করেন। অর্পিত দায়িত্ব পালনে সদা তৎপর থাকেন। নিজের দায়িত্ব সমন্ধে সচেতন থাকেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথেও সমন্বয় ভালো।
৫। সেরা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা:
মো: শফিকুল ইসলাম ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, বলাইশিমুল ইউনিয়ন, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। অর্পিত দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশণা দ্রুত বাস্তবায়ন করেন। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প বাস্তবায়নে খাস জমি চিহ্নিতকরণ, বেদখল থেকে উদ্ধার, উপকারভোগী বাঁছাই, গৃহ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
৬। সেরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান
জনাব মো: আজিজুল ইসলাম, চেয়ারম্যান, সান্দিকোনা ইউনিয়ন পরিষদ, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং দায়িত্ব পালনে দ্রুত রেসপন্স করেন। নিয়মিতভাবে সভাগুলিতে উপস্থিত থাকেন। সরকারি বিভাগগুলিকে সর্বোচ্চ সহযগিতা করেন। অর্পিত দায়িত্ব যথাসময়ে পালন করেন এবং কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। সদিচ্ছা যাঁর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
৭-৯। করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে বিশেষ অবদান রাখায়-
ক। ডা: শাহেদ হাসান শাওন, মেডিক্যাল অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা
 করোনার শুরু থেকেই ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন।
 করোনায় আক্রান্ত রোগি সমন্ধে প্রশাসনকে আপডেট রেখেছেন।
 করোনা সংক্রান্ত সকল তথ্য রেজিস্টারে আপডেট এবং করোনা রোগিদের ফলো আপ সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন।
খ। ডা: গোলাম সারোয়ার তারেক, মেডিক্যাল অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা
 করোনা ভ্যাক্সিন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম এবং ভ্যাক্সিন প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম নিরলসভাবে করে যাচ্ছেন।
 ইউনিয়নে ইউনিয়নে ভ্যাক্সিন গ্রহণে উপযুক্ত ব্যক্তিদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
 ভ্যাক্সিন গ্রহণের পর গ্রহণকারীদের কোন অসুবিধা হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে খোঁজ-খবর রেখেছেন।
গ। জনাব কাজী শাহনেওয়াজ, অফিসার ইনচার্জ, কেন্দুয়া থানা, নেত্রকোণা
 করোনাকালে লকডাউন বাস্তবায়নে নিজে সামনে থেকে পুলিশ ফোর্সকে পরিচালনা করেছেন।
 হাট-বাজার, উপজেলার এন্ট্রি পয়েন্টে পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন।
 প্রশাসনের প্রয়োজনে দ্রুত রেসপন্স করেছেন।
 জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন মাস্ক বিতরণ, মাইকিং ইত্যাদি করেছেন।
 বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কিন্ডার গার্টেন, কোচিং-এ তদারকি নিশিচত করেছেন।
১০। সেরা অফিসার উদ্যোগী অফিসার
জনাব সাজ্জাত হোসেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। উপজেলায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং তা টেক্সই করার লক্ষে কাজ করছেন প্রতিনিয়ত। তাঁর উল্লেখযোগ্য উদযোগী কাজগুলির মধ্যে রয়েছে-
 কিছু সুযোগ সন্ধানী লোকজন নদীতে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে থাকে।। তিনি উদ্যোগী হয়ে প্রশাসনকে দ্রুত অবহিত করতেন। ফলে জনস্বার্থে দ্রুত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে তা অপসারণ করার সুযোগ পাওয়া যেতো।
 তাছাড়া নিজ দপ্তরের যে কোন কাজ নিয়েই তিনি নিজেই আগে হোমওয়ার্ক করতেন এবং তা প্রশাসনকে অবহিত করতেন। ফলে জনস্বার্থ রক্ষা সহজ হতো এবং কাজগুলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার সুযোগ তৈরি হতো, অন্তত সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেয়া যেতো।
 নিজ দপ্তরের কাজগুলি শেষ মুহুর্তে তাড়াহুড়ো না করে যথাসময়ে সম্পাদন করার জন্য উদ্যোগ নিয়ে থাকেন।
 মাঠ পর্যায়ে নিজে উপস্থিত থেকে কাজ তদারকি করার প্রতি ঝোঁক রয়েছে।
১১। সেরা উদ্ভাবনী কর্মকর্তা:
জনাব মো: ছানোয়ার হোসেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। যোগদানের পর থেকেই প্রাথমিক স্কুলগুলিকে কিভাবে শিশুদের মাঝে আকর্ষণীয় করা যায় তা নিয়ে পরিকল্পণা করে কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারি বরাদ্দ দিয়ে স্কুলে নানামুখী কাজ হাতে নিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য্য কাজের মধ্যে স্কুলের বাইরের দেয়ালে বর্ণমালা এবং বিভিন্ন দেয়াল চিত্রের মাধ্যমে চিত্রায়ণ করছেন। সবসমসয় আউট অব বক্স চিন্তা করার একটি ঝোঁক রয়েছে তাঁর মধ্যে। তাছাড়া সকল প্রাইমারি স্কুলে শহীদ মিনার স্থাপন, বঙ্গবন্ধু কর্নার করার পরিকল্পণা রয়েছে তাঁর। তিনি ডিজিটালি সিস্টেমে অত্যন্ত দক্ষ, সক্রিয় এবং ভালো একজন ট্রেইনার ও সংগঠক।
১২। সেরা কর্মকর্তা (ব্যক্তিগত পর্যায়):
জনাব মো: খবিরুল আহসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি), কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। জনবল স্বল্পতার জন্য যে কাজগুলির প্রতি সাধারণভাবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণের একটি অনাগ্রহ থাকে কিংবা মনোযোগ দিতে পারেন না, তিনি জনস্বার্থে সেই কাজগুলিতে গুরুত্ব দিয়ে সময় ব্যয় করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজগুলি হচ্ছে-
 চলতি বছরে প্রায় ৭০ টি মিস কেস নিষ্পত্তি করেছেন
 নিজ দপ্তরের ওয়েবসাইট শতভাগ হালনাগাদ করেছেন
 ১৬ টি উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার
 আনুমানিক ১৫ একর কৃষি অকৃষি ভূমি দখল উদ্ধার
 সরকারি খাস পুকুর এবং জলমহালগুলি চিহ্নিত করে সেগুলিকে ডিজিটাল ডাটাবেইজের আওতায় নিয়ে এসেছেন।
 ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি তৈরি করেছেন যা বিভিন্ন মহলে প্রসংশিত হয়েছে।
 তাছাড়া করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ৬৬ টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন।
১৩। সেরা কর্মকর্তা (প্রতিষ্ঠান পর্যায়)
মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান ডিজিএম, উপমহাব্যবস্থাপক, কেন্দুয়া জোনাল অফিস, নেত্রকোণা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। সিস্টেমগত দুর্বলতা থাকলেও নিজের কর্মদক্ষতার গুণে তিনি পল্লী বিদ্যুতকে সক্রিয় করেছেন। পরিষদের বাইরে অফিস হওয়ায় প্রায়ই দেখা যায় উপজেলার অন্যান্য অফিসের সাথে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কণ কার্যকর যোগাযোগ থাকে না। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর সকল উপজেলার সকল অফিসের পাশাপাশি অনায়ন্য শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে একটি সংযোগ গড়ে তুলেছেন। যে কোন অভিযোগ বা আবেদনে দ্রুত সাড়া দিয়ে থাকেন, সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন এবং ফিডব্যাক দিয়ে থাকেন।
১৪। একটি ব্যতিক্রমী পুরস্কার
জনাব মো: আব্দুর রউফ, গাড়ী চালক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, কেন্দুয়া, নেত্রকোণা। প্রশাসনের অফিসারদের যে ধরণের কোয়ালিটি থাকা আবশ্যক, একজন গাড়িচালক হয়েও সে ধরণের কোয়ালিটি সম্পন্ন একজন কর্মী হচ্ছে জনাব মো: আব্দুর রউফ। তাঁর অসাধারণ গূনগুলি আমাকে ভাবায়, ক্ষণিক সময়ের জন্য হলেও আফসোসও হয় এজন্য যে উনি উনার পদে থেকে যে গূণগুলি রপ্ত করেছেন, সেগুলি আমি নিজেও উনার মতো করে রপত করতে পারি নি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যিনি যত বিরল গূণসম্পন্ন ব্যক্তি হোন, তাঁর মধ্যেই একটি অস্বস্থিকর অন্য একটি দোষ লুকায়িত থাকে। কিন্তু গত ১ বছরে তাঁর মধ্যে আমি সেটার অবস্তানওটের পাইনি। পাবলিক পোস্টে সবকিছু (বিশেষ করে ব্যক্তিগত কিছু বিষয়) উল্লেখ করার সুযোগ নেই, তাই উল্লেখযোগ্য গূনাবলী যা আমার সময় মনে থাকবে সেগুলিই উল্লেখ করছি-
 অত্যন্ত ডিসিপ্লিনিড একজন কর্মী, সময়ানুবর্তিতা কেবল বইয়ে কিংবা সিনেমায় দেখা যায়। কিন্তু সমায়ানুবর্তিতার বাস্তব একজন মানুষ হচ্ছেন তিনি। তাঁর কাছে ৯ টা মানে ৯টা।
 কোন সরকারি কর্মী যে নিজের পেশা সংশ্লিষ্ট সরকারি সম্পত্তির প্রতি এতো দরদ দেখাতে পারে, সেতার বাস্তব পাঠ নেয়ার মডেল তিনি হতে পারেন অনায়াসে
 নিজের অনেক বাস্তব সমস্যা থাকলেও অভিযোগ নামক শব্দ উনার ডিকশনারিতে সম্ভবত নাই, অন্তত আমি পাই নাই
 একজন সরকারি কর্মীর যে আচরণ বা ঊর্ধ্বতণদের সাথে যে এপ্রোচ হওয়ার কথা, পুঁথিগত শিক্ষা অতোটা না থাকলেও ব্যবহারিক পরীক্ষা নিলে তিনি অনেক ড এ ডট বা কোলনদেরকে পিছনে ফেলে দিবেন সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।
 ছুটি নিলেও তিনি তা আগে থেকেই পরিকল্পণা করে রাখেন কিভাবে আমার গাড়ির চাকা ঘুরবে। নিশ্চিত করেই আমাকে জানান দেন তাঁর ছুটির দরকার। অর্থৎ অধিকারের ছুটিটাও যেনো নিজেই মঞ্জুর করে রাখেন।
 অফিসের কোন বিষয়ে তার আগ্রহ নেই যেটা সরকারি দপ্তরের কিছু পদের ব্রেড এন্ড বাটার। অফিসের স্বার্থহানী ঘটতে পারে এরকম কোন কাজে তিনি নিজেকে জড়ান না বা কৌশলে এড়িয়ে চলেন। কিন্তু তাঁর চোখে অস্বাভাবিক কিছু ধরা পড়লে ঠিকই আদর্শ সরকারি কায়দায় তা নোট করে রাখেন।
এরকম আরো অনেক ব্যতিক্রমী চরিত্রের নায়ক তিনি। আমার ধারণা তিনি জেনেটিকভাবে এ সকল গূণের অধিকারী অথবা প্রশাসনের সাথে চাকরি করতে করতে তিনি সেখান থেকে বেছে বেছে ভালো গুণগুলি নিজের মনে প্রবেশ করিয়ে নিয়েছেন। অনেকে হয়তো বলতে পারেন আমি কি বাড়িয়ে বলছি কি না বা বদলি ব্যতিত কিংবা অবসর ব্যতিত কর্মাবস্থায় কেনো একজন অধস্তনকে প্রশংসা করছি আমি। এ প্রসঙ্গে মার ব্যক্তিগত মতামত অফিসের বাইরে উনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে উনি কি রকম সেটা আমার মূল্যায়নে বিবেচ্য না, কেননা আমি তাঁকে অফিশিয়ালি জাজ করছি। আর একজন ভালো মানুষের মূল্যায়ন কেবল বদলি কিংবা অবসর বা মৃত্যুর জন্য তুলে রাখার কালচারটা শুদ্ধাচারের পরিপন্থি হিসেবেই ভাবার সময় এসেছে।
উল্লেখ্য অনেকেরই এ তালিকায় আসার মতো যোগ্যতা রয়েছে তা আমি জানি, কিন্তু যেহেতু একটি শ্ররট লিস্ট করতে হয়েছে তাই সেখানে কেউ থাকবেন আর কেউ বাদ পড়বেন সেটাই স্বাভাবিক। আর সৃষ্টিকর্তা ব্যতিত কোন কিছুই পরম নয়, তাই আমাদের বিবেচনাও অনেকের কাছে পুরোপুরি সঠিক না হতে পারে। আশা করছি সেটাকে সবাই বাস্তবসম্মত কারণে স্বাভাবিকভাবেই নিবেন।
আমাদের কাজ ভিন্ন, কিন্তু গন্তব্য এক। জনগণের সেবা করাই আমাদের সকলের মটো। সকলকে অশেষ ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2021 khobornetrokona
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin