হাইকোর্ট কর্তৃক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল আদেশের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের সর্বস্তরের ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৮ জুন) সকাল ১১ টায় উপজেলার পৌর শহরের হারুন পার্কের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়-বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ‘১৮ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে, ইত্যাদি শ্লোগানযুক্ত প্ল্যাকার্ড নিয়ে ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রিদুওয়ানুল হাসান ফাহাদ, মোঃ আশিকুর রহমান রাজিব, মোঃ মোজাম্মেল হক, মোঃ ওয়ালিউল্লাহ, মেহেদী হাসান, মোঃ মনির, রাজিবুল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, ফাহিম, রাজন প্রমুখ।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘জনগণের জন্য হাইকোর্ট, জনগণের জন্য আইন, আইন সংশোধন করে হাইকোর্টের এই রায় আপনারা বাতিল করবেন। এই রায় বাতিল না করলে আমরা কঠোর কর্মসূচী পালন করবো।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা বাংলার ছাত্র সমাজ, আমরা বাংলার ছাত্র, আমরা দেখিয়ে দিয়েছি এর আগে বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে কিভাবে আমাদের অধিকার আদায় করতে হয়। যারা উপর মহলে আছেন, যারা এইটার দায়িত্বে আছেন তাদের উদ্দেশ্যে করে তারা বলেন, সারা বাংলায় আপনারা ছাত্রদের রাজপথে নামাবেন না। আমরা কৃষকের সন্তান। আমরা আমাদের পরিশ্রম দিয়ে বাবার খেত-খামারে কাজ করা টাকা দিয়ে পড়াশোনা করে, মেধা অর্জন করে তারপর যাই একটা সরকারি চাকরির আশায়। আপনারা কি করেন সেখানে কোটা তৈরি করেন। একটি দেশের সরকারি চাকরিতে ৫৬% কোটা দিয়ে চাকরি হয় আর মাত্র মেধাবীদের জন্য ৪৪% হয়।
এ সময় বক্তারা আরো বলেন, সরকারি নিয়োগগুলো হবে মেধার ভিত্তিতে, যোগ্যতার ভিত্তিতে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কোটা প্রথা চালু রয়েছে কিন্তু আমাদের দেশের মতো এত বড়ো বৈষম্য কোথাও দেখি না। মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছেন, তাদেরকে স্যালুট জানাই, সম্মান করি। তাদেরকে পারিবারিকভাবে সরকার সহযোগিতা করছে। কিন্তু তাদের নাতি-নাতনিদের পর্যন্ত কোটা দিতে হবে এটাকে আমরা মানতে পারি না, মানতে পারবো না। এটা একটা চরম বৈষম্য, এই বৈষম্য আমরা কখনো মেনে নেবো না। আপনারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সে সিদ্ধান্তকে অচিরেই বাতিল করতে হবে।
হাইকোর্টের এই রায় বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্ররা।
উল্লেখ্য যে, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা পরিপত্র গত ৫ জুন অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এই রুলটিকে যথাযথ বলে ঘোষণা করেন।