২৫ জুলাই সোমবার দৈনিক সমকাল পত্রিকার ৪ পাতায় সম্পাদকীয় ও মতামত এর ৩,৪,৫,৬ নং কলামে”শতবর্ষী বলাইশিমুল মাঠটি বাঁচাতে হবে” শিরোনামে আবুল কালাম আল আজাদ, অধিকারকর্মী হিসেবে প্রতিবেদনে যে মতামত তুলে ধরেছেন, তার বিপক্ষে কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনের লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছেন কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা বেগম।
তিনি তাঁর লিখিত প্রতিবাদে উল্লেখ করেছেন-প্রতিবেদনে বলাইশিমুল মাঠ সম্পর্কে যে সব মতামত তুলে ধরা হয়েছে,তা আদৌ সত্য নয়। আবুল কালাম আজাদ তার মতামতে যেসব মনগড়া,মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করেছেন তা অযৌক্তিক। একটি স্বাধীন জাতির সামনে এসব বিভ্রান্তিকর তথ্য সংবাদপত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য দুঃখজনক। সচেতন সমাজ ব্যবস্থায় এ ধরনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলা এক ধরনের ধৃষ্টতা। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে মাঠের বর্তমান চিত্র তুলে ধরছি। বলাইশিমুল মাঠের মোট জমি ১.৮৭ একর এর মধ্যে .৭৬ একর জমি বেদখল ছিল। তা উদ্ধার করে .৪৬ একর জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে যাদের ভূমি নেই ঘরও নেই তাদের জন্য প্রত্যেককে .০২ একর করে জমি বরাদ্দ দিয়ে ২৩ টি আধাপাকা ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সেখানেই বিশেষ বিবেচনায় এখন ১৯ টি ঘর নির্মিত হচ্ছে। ঘর নির্মাণের জায়গা বাদ দিয়ে মাঠে ১.৪১ একর জমি খেলার মাঠ বা জনসাধারণের যেকোন কাজে ব্যবহার করার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। যার দৈর্ঘ্য পূর্বাংশে ২৮৬ ফুট এবং পশ্চিম পার্শ্বে ৩২০ ফুট এবং প্রস্থ উত্তর পার্শ্বে ১৭৯ ফুট এবং দক্ষিণ পার্শ্বে ২১২ ফুট। অথচ আবুল কালাম আল আজাদ তার মতামতে উল্লেখ করেছেন, বলাইশিমুল গ্রামে ১০৮ একর খাস জমি রয়েছে এর মধ্যে ১০ একর উচু খাস জমি আছে যা সঠিক তথ্য নয়।
প্রতিবাদ লিপিতে ইউএনও মাহমুদা বেগম আরও উল্লেখ করেছেন-মূলত সরকারি রেকর্ড জরিপে বলাইশিমুল গ্রামে এখনই আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণ উপযোগী কোন খাস জমি নেই। খেলার মাঠের চারপাশে মাঠটির সম্পূর্ণ খাস জমি সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও দখলে রাখা এবং সেই সাথে মাঠ রক্ষার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরী করা হচ্ছে। কিন্তু জনাব আবুল কালাম আল আজাদ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে লিখে যাচ্ছেন ঘরের জায়গা বাদ দিয়ে মাঠে মাত্র ৩৫-৪০ ফুট জায়গা থাকে তাতে ফুটবল বা কোন খেলাই হবে না। আশ্রয়ন প্রকল্প সম্পর্কিত সকল কমিটি কর্তৃক এই মাঠ সার্ভেয়ার দ্বারা পরিমাপ করা হয়েছে এবং প্রকৃত চিত্রটি আগেই তুলে ধরা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,শিক্ষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা,সাংবাদিকগণ ও সুশীল সমাজের জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই মাঠ রক্ষা করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। সুতরাং কেন্দুয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা লিখিত প্রতিবাদ লিপি দৈনিক সমকাল সম্পাদক বরাবরে প্রেরণ করেছেন এবং সদয় জ্ঞাতার্থে অনুলিপি প্রদান করেছেন মাননীয় সংসদ সদস্য ১৫৯,নেত্রকোনা-০৩ আসন,নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর।
এছাড়াও কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা বেগম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে সকলের অবগতির জন্য লিখেছেন-
যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলাইশিমূল ইউনিয়ন এর খেলার মাঠের বিষয়ে পুরো মাঠ জুড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে এবং মাঠে পর্যাপ্ত জায়গা থাকছে না বলে গুজব ছড়াচ্ছেন, তাদের সহ সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, মাঠের চারপাশের .৭৬ একর খাস জমি উদ্ধার করে .৪৬ একর জমিতে মাঠের পূর্ব ও উত্তর পাশে ঘর নির্মিত হচ্ছে, ১.৪১ একর জমি খেলার মাঠ বা যেকোনো কাজে ব্যবহার এর জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। দয়া করে কেউ গুজবে কান দিবেন না, প্রকৃত তথ্য জানার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।