নেত্রকোণার দুর্গাপুরে ২৪ ডিসেম্বর (শুক্রবার) বিকালে জলসিঁড়ি পাঠাগার’র ৯ম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে দরিদ্র যাত্রাশিল্পী জাহেদ আলী মংলার দুই পূত্র সন্তানকে হারানোর কথা শুনে আবেগাপ্লুত হন বিরিশিরি কালচারাল একাডেমির পরিচালক গীতিকার সুজন হাজং।
এ সময় তিনি জাহেদ আলী মংলাকে পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা করেন।
গীতিকার সুজন হাজং বলেন, যাত্রাপালা আজ বিলুপ্তির পথে। সত্তর দশকে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ছিলো এই যাত্রাপালা। গ্রামগঞ্জে, হাট বাজারে, মাঠে, পাড়ায় কিংবা মহল্লায় একসময় যাত্রাপালায় হাজারো মানুষের সমাগম দেখা যেত। এখন আর সেই লৌকজ সংস্কৃতির ধারক যাত্রাপালা চোখে পড়েনা।
জাহেদ আলী মংলার মত যাত্রাশিল্পিরা আজ অর্থাভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
উল্লেখ্য ১৯৪৭ সালে পহেলা মে নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জাহেদ আলী মংলা।
যাত্রাশিল্পি জাহেদ আলী মংলা হাজারো মানুষকে কবিতার ছন্দে মানবতার গল্প ফেরী করে বেড়ান। ১৩ বছর বয়সেই তিনি জড়িয়ে পড়েন যাত্রাপালায়। তার মঞ্চায়িত যাত্রাপালাগুলো হল জল্লাদের প্রতিদান, মায়ের কোলে কাঠের পুতুল, সতীর কোলে জারজ সন্তান, অভিশপ্ত জংলী কণ্যা, বিনামূল্যে দাসী, প্রেমের জলন্ত প্রমাণ, রক্তে রাঙা বাসর, মায়ের আদেশ।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায়। প্রভাষক দীপক সরকারের সঞ্চালনায় পাঠাগারের সভাপতি এডভোকেট মানেশ সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ মতীন্দ্র সরকার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস (ঝুমা), জেলা পরিষদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শফিক, দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা শাহনুর এ আলম, কবি তানভীর জাহান চৌধুরী, কবি লোকান্ত শাওন প্রমুখ।