ঘুমের কোনো প্রকারভেদ আছে কিনা তা জানা নেই। তবে মরার ঘুম বলে একটি শব্দ প্রচলিত রয়েছে। যার অর্থ বেহুশের মতো ঘুমানো। মরার কোকিলের পক্ষেও যে ঘুম সহজে ভাঙ্গানো মুশকিল।
মাসখানেক ধরে ফসল রক্ষা বাঁধ টিকিয়ে রাখতে কতো প্রাণপন চেষ্টাই না চলছে। যারা এতোদিন ঘুমিয়ে ছিলো তারাও এখন যথেষ্ট সজাগ।
তবু এমন মরার ঘুম ঘুমিয়েছেন মেন্দিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান হেকিম। যিনি গত ২৬ এপ্রিল নিজস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কেটে দিয়েছেন ফসল রক্ষা বাঁধ।
তাইতো চেয়ারম্যানের এমন অচেতনতাকে রুপক অর্থে মরার ঘুম হিসেবে আখ্যায়িত করা যেতেই পারে। হয়তো ঘুমের ঘোরেই কেটে ফেলেছেন বাঁধ নামক লাখো মানুষের পেট।
স্বপ্নের ফসল হারানোর শঙ্কায় এমনিতেই উৎকণ্ঠায় ছিলো কয়েক হাজার কৃষক পরিবার। এই অবস্থায় চেয়ারম্যানের এমন কর্মকাণ্ড যেন মরার উপর খাড়ার ঘা’র সামিল।
চারিদিকে কৃষকের কানভারী করার মতো হাহাকারও তাকে করতে পারেনি সজাগ। নিজের স্বার্থ হাসিল করতে এতোটাই বিভোর ছিলেন যেন সবকিছু গোল্লায় যাক।
হাওরের বুকে ফসল খেকো লোকমান হেকিমের ভয়ংকর থাবায় বৃথা যাবার পথে বাঁধ টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা।
অথচ এই অসহায়-দুঃখী মানুষ গুলোই একদিন প্রত্যক্ষভোটে তাকে দিয়েছিলেন চেয়ারম্যানের খেতাব। খাল কেটে কুমির এনে এখন বুঝি তাদেরই হচ্ছে পরিতাপ।
যদি লোভে পড়ে বেহুশ হয়ে অনিরাপদ ব্যক্তিকে জনতাই নির্বাচিত করে তবে মাশুলটা দিতে হবে জনতাকেই। যার দরুন মেন্দিপুর বাসীর এই ফলভোগ।
শুনেছি এই লোকমান হেকিমের ক্ষমতাসীন আ.লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা। তবে এখনো শোনা হয়নি উক্ত কর্মকাণ্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে দলীয় কোনো শক্তিশালী পদক্ষেপ।
তবে কি ভেবে নিবো স্থানীয় আ.লীগ নীতিনির্ধারকদের খুঁটিটা বেশ নড়বড়ে!এই লোকমান হোসেনকে পরিতুষ্ট করেই কি হাওর বুকে আ.লীগ পরিচালিত হয়!
সবশেষ লাখো মানুষের পেটে আঘাত করা লোকমান হেকিমের গ্রেফতারের আগেই ৬ সপ্তাহের জামিন নতুন এক অস্বস্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে। কোত্থেকে এতো ক্ষমতার যোগান পায় এই লোকমান হেকিম নামক আওয়ামী নামধারীরা।
মনে রাখতে হবে শুধু চেয়ারম্যানই নয়, যেকোনো জায়গায় অযোগ্যদের নেতৃত্বের বিপরীতে প্রাপ্তি নিষ্ফলাই হয়।