নানা স্থাপত্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গোটা মোমেনসিং পরগনা জুড়ে। প্রাচীন জনপদ হওয়ার কারণে নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য এখানে গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রাচীন মসজিদগুলির গঠনশৈলীর স্থাপত্য বিভিন্ন এলাকাকে চিহ্নত ও সমৃদ্ধ করেছে।
পাঠান বা সুলতান হোসেন শাহ অথবা দিল্লির সম্রাটরা মোমেনসিং পরগনার নানা পীর, ওলি এবং আওলিয়াদের মাজারের কাছে মসজিদ নির্মাণ ও পুকুর খননও করেছিলেন বলে জানা যায়। কথিত রয়েছে, ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার হযরত টেনু শাহ (রহ.) মাজারের কাছে মুখুরিয়া প্রাচীন জামে মসজিদটি কোন মুঘল বা পাঠান শাসক তৈরি করেছিলেন।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের কামরূপ শাসনের অবসান হলে মুসলিম সুলতানরা রাজ্য শাসন করেন। বিশেষতঃ কামরূপকে ব্রহ্মপুত্র নদ এবং ভুটানের পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত বলে মনে করতো, যাদু, যোজনা এবং যাদুবিদ্যার বিশেষজ্ঞ অনুশীলনকারীদের দ্বারা বাস করা এক কল্পিত এবং রহস্যময় স্থান।
সিলেট সফরকালে ইবনে বতুতা উল্লেখ করেছিলেন, ‘এই পাহাড়ের বাসিন্দারা যাদু এবং জাদুবিদ্যার প্রতি তাদের অনুরাগী অনুশীলন এবং অনুশীলনের জন্য খ্যাতিমান।’
এখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয় পীর, আউলিয়া, ফকির ও দরবেশদের বদৌলতে। মুসলিম শাসকরা যখনই কোনো অঞ্চল বা স্থান জয় করেছেন, তখনই তারা সেখানে মসজিদ নির্মাণ করেছেন। ময়মনসিংহ অঞ্চলের মুঘল বা সুলতানি আমলের বেশ কিছু মসজিদ এখনও কালের সাক্ষী হয়ে নিজেদের অস্তিত্ব ঘোষণা করছে।
মোমেনসিং পরগনার গৌরীপুর উপজেলার মুখুরিয়া গ্রামে পাঁচ থেকে সাতশ’ বছর আগের দুটি প্রাচীন মাজার অবস্থিত।
এই সব তথ্য ও বক্তব্যের সূত্র ধরে ক্রিয়েটিভ এসোসিয়েশন এবং দি ইলেক্টোরাল কমিটি ফর পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্স এর যৌথ উদ্যোগে আড়াইশ’ বছর আগে ব্রিটিশ ভূবিদ জেমস রেনেলের মানচিত্র সংগ্রহের মাধ্যমে মোমেনসিং পরগনার প্রাচীন নিদর্শন খোঁজার জন্য ২০২০ সাল থেকে জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়। মোমেনসিং পরগনায় ৮০ এর অধিক মোগল আমলের মসজিদ ছিল যা মুসলিম শাসন এবং আফগান সামরিক প্রশাসন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার অন্তর্গত বোকাইনগর ছিল মোমেনসিং পরগনার রাজধানী।
মুখুরিয়া প্রাচীন জামে মসজিদঃ
মুখুরিয়া গ্রামে এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটিই হচ্ছে সবচেয়ে প্রাচীন প্রত্নসম্পদ। নান্দনিক প্রাচীন মসজিদকে স্থানীয়রা ‘মুখুরিয়া প্রাচীন জামে মসজিদ’ নামে চেনে। ‘পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্স ’ম্যাগাজিন বই থেকে এ তথ্য জানা যায়।
গৌরীপুর উপজেলা শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অচিন্তপুর ইউনিয়নের মুখুরিয়া গ্রামে প্রাচীন নান্দনিক এই মসজিদ। নেত্রকোণা-শাহগঞ্জ সড়কের কিল্লাতাজপুর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার মুখুরিয়া বাজারের নিকটে এখান সহজে যাওয়া যায়।
গত বছর (২০২০ সালে) ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সুলতান বা মুঘল আমলের নির্মিত এক গম্বুজ মসজিদটি অনেকটা বিবর্ণ হয়ে গেছে। মসজিদে প্রবেশ করার জন্য রয়েছে একটি দরজা।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো আ. বারী মাস্টার। তিনি বলেন, ‘এক গম্বুজের মসজিদটির নির্মাণের সঠিক ইতিহাস কেউ জানে না। মসজিদটির নির্মাণের বয়স পাঁচশ বছর অধিক হতে পারে। শতবছর আগে মসজিদের চারদিকে গভীর জঙ্গল ছিল। বর্তমান মসজিদের নিজস্ব জায়গায় ১৯০ শতাংশ জমি রয়েছে। গ্রামের পূর্বপুরুষেরা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নামাজ পড়তে এখানে আসতেন। পরবর্তী সময়ে মসজিদে জায়গা সংকুলান না হওয়ার কারণে এটির সামনে একটি বারান্দা নির্মাণ করা হয়।’
যেহেতু এটি একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা, সেহেতু এই মসজিদটি বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবি রাখে। ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে মসজিদটি টিকিয়ে রাখা দরকার।
মসজিদ কমিটি জানায় ‘তবে মসজিদটি এ উপজেলার সুলতানী আমলের প্রত্নকীর্তির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অতিশিঘ্রই পুরোনো ভবনটি দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হবে।
জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, মোমেনসিং পরগনার ৫৫টি মোগল আমলের মসজিদ পাওয়া গেছে যা বারো ভূইয়া আমলের জলদুর্গের নিদর্শন। এইসব অমূল্য স্থাপত্য কীর্তিগুলো তৈরি হয়েছিল তৎকালীন সুলতান ও মুঘল রাজাদের আমলে। মসজিদ প্রাঙ্গণের পূর্ব পাশেই রয়েছে সুলতান আমলের রওজা। ইতিহাস-ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারকল্পে সরকারের প্রতি এটিকে একটি পুরাকীর্তির মর্যাদা দিয়ে সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন ক্রিয়েটিভ এসোসিয়েশন এবং দি ইলেক্টোরাল কমিটি ফর পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্স।
হযরত টেনু শাহ (রঃ) এর মাজার শরীফঃ
নদীর চিহ্ন, প্রাকৃতিক সীমা ও বিবরণ, প্রাচীন জনপদ, ভূমিস্বত্ব, বিভিন্ন শাসনকাল, বাণিজ্য স্থান, পূর্ব ময়মনসিংহে শাসকদের স্মৃতিচিহ্ন ইত্যাদির কালের সাক্ষী মধ্যযুগের মাজারগুলো। প্রাচীন নিদর্শন খোঁজার জন্য মাজারের গুরুত্ব অনেক। একই গ্রামের দু’টি মাজার নিয়ে গবেষণা শুরু হয়। এ অঞ্চলে দু’টি মাজারের কোন ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল অদ্যাবধি পাওয়া যায়নি। তা গবেষণা, জরিপ, জনশ্রুতি ও কিংবদন্তির উপর ভিত্তি করে মাজারের কিছু ইতিহাস তুলে ধরা হলো।
গৌরীপুর উপজেলায় মুখুরিয়া গ্রামে হযরত টেনু শাহ (রঃ) এর মাজার শরীফ। মোমেনসিং পরগনার বিভিন্ন অংশে যারা ইসলাম প্রচার করেছিলেন তাঁদের মধ্যে হযরত টেনু শাহ (রঃ) একজন। ‘মুখুরিয়া প্রাচীন জামে মসজিদ’ হতে ১০০গজ দূরত্বে পূর্বে মাজারটি অবস্থিত। এটা মধ্যযুগের ঐতিহাসিক মাজার শরীফ নামেই বেশি পরিচিত। বাবা হযরত টেনু শাহ (রঃ) আওলিয়া এই এলাকায় ইসলামের শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেন।
জনশ্রুতি অনুযায়ী পাঁচ থেকে সাতশ’ বছর আগে হযরত টেনু শাহ (রঃ) ইসলাম প্রচার করতে মুখুরিয়া গ্রামে আগমন করেন। অতঃপর তিনি এখানে স্থায়ী হয়ে যান। এই মহান আওলিয়ার মাজার শরীফ জিয়ারত করতে প্রতি বছর উরশে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এ মাজারের নামে পূর্বে পীরপাল দানের কতটুকু জমি ছিল তাদের জানা নেই।
হযরত জাগির মাস্তান (রঃ) এর মাজার শরীফঃ
ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলাধীন মুখুরিয়া গ্রামে হযরত জাগির মাস্তান (রঃ)-এর মাজার শরীফ অবস্থিত। এই মহান ইসলাম প্রচারক হযরত জাগির মাস্তান (রঃ) সম্পর্কে যতটুকু জানা যায়, তাঁর জন্ম বাংলার বাহিরে। হযরত টেনু শাহ (রঃ) এর মাজার শরীফ থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরত্বে পূর্বদিকে একই গ্রামে অবস্থিত মধ্যযুগের হযরত জাগির মাস্তান (রঃ) এর মাজার।
তখনকার যুগে আজকের সমগ্র গৌরীপুর উপজেলা ছিল মোমেনসিং পরগনার অন্তর্গত। ১৪৯৮ সালে হুসেন শাহ বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার সময় সমগ্র ময়মনসিংহে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো ময়মনসিংহ জেলাতেও ইসলাম প্রচারিত হয়েছিল মূলত সূফী, পীর, ফকির, অলি ও বুজুর্গদের মাধ্যমে। ময়মনসিংহ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অসংখ্য পীর ফকির দরবেশদের দরগাহ, মাজার অথবা তাঁদের সৃতি বিজড়িত মসজিদ লোকস্মৃতি বিদ্যমান।
এছাড়া ময়মনসিংহ জেলার হুসেনশাহী পরগণা এবং হুসেনপুর উপজেলা নামক স্থানটি হুসেন শাহের অস্তিত্ব প্রমাণ করে এবং সুলতান হোসেন শাহ তাঁর পুত্র সৈয়দ নাসির উদ্দিন নসরত শাহ’র জন্য মোমেনসিং পরগনার পূর্ব দক্ষিণে অবস্থিত নাসিরুর্জিয়াল (কেন্দুয়া, তাড়াইল….) পরগনায় একটি নতুন রাজ্য গঠন করেছিলেন, সেই থেকেই নাসির উদ্দিন নসরত শাহের অস্তিত্ব প্রমাণ করে।
সুলতান হোসেন শাহ বা দিল্লির সম্রাটরা বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় নানা পীর, ওলি এবং আওলিয়াদের মাজারের কাছে মসজিদ নির্মাণ ও পুকুর খননও করেছিলেন। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ের সুলতানগণ সূফী সাধকদের প্রতি অভিভূত হন এবং কিছু নিষ্কণ্টক জমি গ্রহণের জন্য খাদেম বা অনুসারীদেরকে অনুরোধ জানান।
জরিপকালীন সময়ে গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে হযরত টেনু শাহ (রঃ) এর মাজার নিয়ে কথা হয়। স্থানীয়রা তাদের পূর্ব পূরুষের মুখে প্রাচীন মাজারের কথা শুনে আসছেন। এ গ্রামের বাসিন্দা মো.আব্দুর রশিদ (৬৩) বলেন, হযরত টেনু শাহ (রা.) চিশতিয়া তরিকার মধ্যে একজন সূফি সাধক। এ মাজারের নামে পূর্বে পীরপাল দানের কত শতাংশ জমি ছিল তার জানা নেই। বর্তমান (২০২১) খোঁজ নিয়ে জানা যায় সর্বশেষ বিআরএস খতিয়ানে এ মাজারের নামে ১৪ শতাংশ জমি রয়েছে।
মুখুরিয়া গ্রামের নিবাসী আবুল কালাম আজাদ বলেন, শত বছর আগে ভীষণ জঙ্গলের মধ্যে এ মাজারের অবস্থান ছিল। ঝোপঝার পরিষ্কার করে মাজারটি পূর্ণঃসংস্কার করা হয়। মাজারের সাথে শতবর্ষী বট গাছ রয়েছে। এ গাছের বয়স কেউ বলতে পারে না। গাছের ডালপালা কাটলে অনেকের অসুখ-বিসুখ হয়। এ গাছ নিয়ে আরও রয়েছে অলৌলিক ঘটনার কথা ও জনশ্রুতি।
কথিত রয়েছে আক্কাস আলী নামে এক ব্যক্তি ১৫/২০ বছর আগে মাজারের সাথে জঙ্গল পরিষ্কার করে তার ফসলের জমি বাড়ানোর জন্য বট গাছের একটি ডাল কাটার সময়ে তার নাকে মুখে রক্ত আসা শুরু করলো। তখন তিনি বুঝতে পারেন, সমাধির সাথে শতবর্ষী বটগাছের একটা ডাল কাটার জন্য তার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই মাজারের অদৃশ্য ঐশ্বরিক শক্তি রয়েছে এবং জ্বীন দ্ধারা পাহারা রয়েছে। তিনি ক্ষমা প্রার্থনা শুরু করেন। এক বছর পর তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে বটগাছের পাতাও কেউ ছিড়ে না। ঝড় তুফান ছাড়া হঠাৎ গাছের কিছু ডাল ভেঙ্গে পড়ে বর্তমান গাছটি অনেকটা ছোট হয়ে গেছে।
মাজার খেদমতকারী শান্ত মিয়া বলেন, তিনি গভীর রাতে ফুলের গন্ধসহ মাজারের অনেক আলামত দেখতে পান। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই মাজারের অদৃশ্য ঐশ্বরিক শক্তি রয়েছে এবং জ্বীন দ্ধারা পাহারা রয়েছে। অনেকে মত দিয়েছেন, হযরত শাহজালালের সাথে যে ৩৬০ জন আউলিয়া এদেশে আসেন, তিনি ছিলেন তাঁদের একজন।
জরিপের ফলাফল হতে দেখা যায় যে, অনেক কিছু মানুষের অজানা রয়েছে। খাদিম মো. লুৎফর রহমান বলেন, হযরত টেনু শাহ (রঃ) মাজার এর সঠিক ইতিহাস কেউ জানে না এবং সনটা আনুমানিক। তিনি যখন এ কথা বলছিলেন, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার পিতা মো. সাহেব আলী। তাঁর মতে, মাজারটি ঐতিহাসিক। মাজারের সনটি মনগড়া। ‘মুখুরিয়া প্রাচীন জামে মসজিদ’ নির্মাণের আগে হযরত টেনু শাহ (রঃ) এখানে অবস্থান করেছিলেন। তাই মাজারের সঠিক ইতিহাস উদঘাটন করা উচিত।
গ্রামবাসীর দাবি, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় রাস্তাসহ মাজারটিকে আরও সংস্কার করা অতি প্রয়োজন।
[স্থানীয় প্রকাশনা ‘ পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্স ’ ম্যাগাজিন বই থেকে জানা যায়, জেমস রেনেল তার মানচিত্র বিভিন্ন নদীর অবস্থান চিহ্নিত করে গেছেন। মধ্যযুগের অধিকাংশ মাজার ছিল নদীর তীরবর্তী স্থানে। ২০১৮ সাল হতে প্রাচীন শাসকদের কীর্তিগাঁথা, জমিদার আমলের নানা ঘটনা ও স্থাপিত বিভিন্ন স্থাপনার ইতিহাস ও জরিপের ফলাফল প্রকাশ নিয়ে বাৎসরিক ম্যাগাজিন ‘ পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্স ’ রচনার উদ্যোগ নেয় সামাজিক সংগঠন ক্রিয়েটিভ এসোসিয়েশন, এসিক এসোসিয়েশন এবং দি ইলেক্টোরাল কমিটি ফর পেন অ্যাওয়ার্ড অ্যাফেয়ার্স। এরই ধারাবাহিকতায়, বিস্মৃতির প্রায় অন্ধকার অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসে মোমেনসিং পরগনা, আলাপসিং পরগনা, সুসং এবং হোসেনশাহী পরগনা নামক লোকালয়টির অবস্থান। তাই ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে মধ্যযুগের মাজারগুলো যত্ন নেয়া সকলের দরকার।