প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত ইতিহাস পর্যালোচনা করলে ময়মনসিংহের সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে অনেক মতপার্থক্য দেখা যায়। আর রেনেলের মানচিত্র ঘাটলে দেখা যায়, আড়াইশ’ বছর আগে মোমেনসিং এবং আলাপসিং পরগনার সীমানা ঘেঁষে সাগরের মতো ব্রহ্মপুত্র নদের অথৈ পানি ঢেউ খেলত এপার থেকে ওপারে। তখন এই নদীর প্রশস্ততা ছিল পনের-বিশ কিলোমিটার। সে সময়ে ব্রহ্মপুত্র অতিক্রম করতে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা সময় লাগত। বর্তমান ময়মনসিংহ জেলা শহর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও এর সংলগ্ন এলাকা, অফিস-আদালত, বিভাগীয় অফিস, সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়, অন্যান্য উপজেলা-সদর, ফুলবাড়িয়া, মুক্তাগাছা উপজেলাসহ আলাপসিং পরগনার অধীন ছিল।
ব্রহ্মপুত্র নদের ওপারে উত্তর-পূর্ব ময়মনসিংহ অর্থাৎ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আংশিক, গৌরীপুর, তারাকান্দা, নেত্রকোনাসহ বিশাল অঞ্চল নিয়ে মোমেনসিং পরগনা গঠিত হয়েছিল। প্রাচীনকালে পরগনার নামকরনের সময়ে আলাপশাহ ও মোমেনশাহ নামের সাথে কেন ’সিং’ যুক্ত করা হয়েছিল তা সঠিক ইতিহাস খুজেঁ পাওয়া যায়নি। জনশ্রæতি আছে, ’সিং’ এখানে নেতৃত্বের খেতাব বা উপাধি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তাছাড়াও ’সিং’ এখানে সিংহাসন ও রাজ্য হিসেবেও গণ্য হতো। এ খেতাব যাকে দেওয়া হতো তাকে রাজা অথবা প্রধান সর্দার বা সেনাপতি হিসেবে বিবেচিত হতেন। যেমন সিংনছরত (একটি পরগনার নাম) যার অর্থ রাজা নছরত , সিংধা মৈন ( একটি পরগনার নাম) যার অর্থ ধামৈন এর রাজ্য।
”হাওর, জঙ্গল, মইষের শিং-এই তিনে মৈমনসিং”, ময়মনসিংহ সম্বন্ধে এ প্রবাদ বহুকাল থেকে প্রচলিত। ভৌগোলিক অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বহুকাল থেকে বিশাল ব্রহ্মপুত্র নদের কারণে বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা দুই ভাগে বিভক্ত। তৎকালীন বিশাল ব্রহ্মপুত্রের পূর্ব তীরে পূর্ব ময়মনসিংহ আর পশ্চিম তীরে পশ্চিম ময়মনসিংহ। সমগ্র ময়মনসিংহ একসময় আসামের কামরূপ রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল। পশ্চিম ময়মনসিংহের তুলনায় পূর্ব ময়মনসিংহে হাওর, জঙ্গল, অনেক ছোট ছোট ভূখন্ড (যেমন ভূখন্ড হিসেবে কান্দা, কান্দি, আটি, হাটি নামে অনেক গ্রাম পরিচিত ), ছোট বড় অনেক খরস্রোতা নদী, জলাশয় ছিল। তখনকার সময়ে নৌকা ছিল একমাত্র প্রধান বাহন। মাঠে ঘাটে পালিত মহিষ এবং অরণ্যে ছিল বহু বন্য মহিষ। তৎকালের পল্লীকবির রচনায় ’মইষাল বন্ধু’ এর মাধ্যমে এ ধরণের চিত্র উপলব্ধি করা যায়। পূর্ব ময়মনসিংহের অরণ্য ভূমিতে কামরূপদের কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্য উদ্ভব হয়। এ ক্ষুদ্র রাজ্যগুলি অসভ্য কোচ, মেচ, হাজং, গারো, ভূটিয়া জনগোষ্ঠী দ্বারা পরিচালিত হতো। তারা ছিলো যুদ্ধবাজ, দলবদ্ধ হয়ে বন্য পশু শিকার করতো। সম্ভবতঃ মহিষের শিং দিয়ে বিভিন্ন অস্ত্র, রণসিঙ্গা, রাজ্যের প্রতীক, উপাধি, বাহুবলির খেতাব, সিংহাসন, মুুকুট ইত্যাদি তৈরি করা হতো। মহিষের শিং দিয়ে তৈরি রণসিঙ্গা বাজিয়ে, ঢাক ডোল বাজিয়ে পশু শিকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন যুদ্ধ বা খেলা পরিচালনা করা হতো। রাজ্যের অধিশ্বরের ঈশারায় সিঙ্গা বাজিয়ে চলতো রাজ্যের কার্যক্রম।
১৪৯৮ খ্রীষ্টাব্দে হুসেন শাহ বাংলার সিংহাসন অধিকার করেন। তিনি আসাম রাজ্যে প্রবেশ করে, কামরূপ রাজ্য জয় করে, ব্রহ্মপুত্রের পূর্ব দিক জয় করে ত্রিপুরা পর্যন্ত অধিকার করেন। মুসলিম শাসকরা তাদের রাজ্য পরিচালনা, অন্যান্য সুবিধা ও ভাষাগত সুবিধার জন্য স্থানীয় সংস্কৃতি চর্চ্চা অব্যাহত রেখেছেন। এখনও নেপাল ও ভারতের বিভিন্ন গোত্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মহিষের শিং দিয়ে তৈরি সিঙ্গা বাজানো দেখা যায়। তা ছাড়াও ময়মনসিংহের বিভিন্ন অঞ্চলে সিঙ্গা, বাঁশি, ঢাক, ডোল বাজিয়ে লাঠিয়াল বাহিনীর মহরা দেখা যায়। তাই ”হাওর, জঙ্গল, মইষের শিং” এখানে ময়মনসিংহের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কথা লুকিয়ে আছে।
প্রাচীনকালে নছরতশাহী বা নছরতবাদ বা নাসিরাবাদ নামে বৃহৎ প্রদেশঃ
সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহ-এর জ্যেষ্ঠপুত্র নুসরত শাহ পিতার উত্তরাধিকারী হিসেবে ১৫১৯ খিস্টাব্দে ‘সুলতান নাসিরুদ্দীন নুসরত শাহ’ উপাধি ধারণ করে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং পিতার সাথে তৎকালীন ময়মনসিংহের বৃহৎ কামরূপ অঞ্চল জয় করে, সেখানে থাকা অবস্থায় নছরতশাহী বা নছরতবাদ বা নাসিরাবাদ নামে নতুন বৃহৎ প্রদেশ পত্তন করেন। লেখক শ্রীকেদারনাথ মজুমদারের ’ময়মনসিংহের ইতিহাস’ নামক প্রামণ্য গ্রন্থে নছরৎসাহ বা নছরৎসাহি সমন্ধে বর্ণনা করেছেন।
কেদারনাথ মজুমদারের মতে, নছরতের নতুন শাসিত প্রদেশ ”নছরত ও জিয়াল” নামে পরিচিত হয়। কামরূপ কর্তৃক পলায়িত নছরৎসাহ আশ্রয়স্থলকে ”নছরত ও জিয়াল” নামাকরণে অভিহিত করেই ক্লান্ত হয়নি, তার শাসনকালে সমগ্র প্রদেশকে ”নছরৎসাহি” নামেও অভিহিত করেছিলেন। বর্তমান বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা এই নছরৎসাহির নামান্তর বা নামকরণ। এই নছরৎসাহি সম্রাট আকবরের সময়ে ’সরকার বাজুহা’ ও ইংরেজ শাসন সময়ে ময়মনসিংহ জেলা হিসেবে পরিচিত হয়। বস্তুতঃ হুসেন শাহের রাজ্য কয়েকটি প্রদেশে বিভক্ত ছিল এবং এগুলোর শাসনভার দেওয়া হয়েছিল গভর্নরের ওপর। ঘোড়াঘাট, বারবকাবাদ, বাজুহা, সিলেট, সোনারগাঁও প্রভৃতি প্রদেশ গঙ্গা (পদ্মা) নদীর উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থিত ছিল। সমস্ত প্রশাসনিক অঞ্চল বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল। কখনো আরসা, যেমন আরসা সাতগাঁও, আবার কখনো ইকলিম, যেমন ‘ইকলিম মুয়াজ্জামাবাদ’। সুলতান সরাসরি প্রাদেশিক গভর্ণর নিযুক্ত করতেন। একটি প্রদেশ আবার কয়েকটি জেলা বা মহলে বা শহরে বিভক্ত হতো এবং একজন শাসনকর্তার ওপর সামরিক কর্তব্য অর্পিত হতো। মহলের প্রধান কর্মকর্তাকে বলা হতো শিকদার অথবা ‘জঙ্গদার’।তবে এখানে একটি বিষয় বলে রাখা ভাল যে, বাংলার অন্যান্য সুলতানদের মতো হুসেন শাহের প্রামাণিক ইতিহাস পাওয়া যায় না। তার শাসনকালের বেশ কিছুসংখ্যক লিপি পাওয়া গিয়েছিল। পূর্ব ময়মনসিংহে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মৃতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কেন্দুয়া এবং তাড়াইল উপজেলা নাসিরুজ্জিয়াল পরগনাভূক্ত ছিল। ঐতিহাসিকের মতে, নছরত শাহ্ আসামের কামরূপ থেকে পালিয়ে পূর্ব ময়মনসিংহের (বর্তমান নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায়) রোয়াইলবাড়িতে এসে আশ্রয় নেন। পরবর্তীকালে ময়মনসিংহের সমস্ত অঞ্চল সমন্বয়ে যুবরাজ নসরত শাহের নামানুসারে নসিরুজিয়াল পরগনা বা প্রদেশ গঠিত হয়। নাসিরুজিয়াল পরগনার এক কালের সদর দপ্তর তাড়াইল অথবা কেন্দুয়ায় অবস্থিত ছিল।
শ্রী কেদারনাথ মজুমদারের মতে, আসামের পাহাড়ি অঞ্চলের কামরূপ হতে নছরৎ পলায়ন করে মুয়াজ্জমাবাদ (বর্তমান পূর্ব ময়মনসিংহে) আগমন করেন ও পূর্ব ময়মনসিংহের শাসনভার গ্রহণ করেন। তার অধিকৃত কামরূপের অংশ দিয়ে নছরতের নতুন শাসিত প্রদেশ “নছরত ও জিয়াল” নামে পরিচিত লাভ করে।
এখানে প্রশ্ন আসে, তাহলে সুলতান আমলে পূর্ব ময়মনসিংহে সুলতান নাসিরুদ্দীন নুসরত শাহ নাসিরাবাদ বা নাসিরুজিয়াল প্রদেশ গুড়াপত্তন করেন আর ইংরেজ শাসনামলে অর্থাৎ ১৭৯১ ইং সালে পশ্চিম ময়মনসিংহে নাসিরাবাদ শহর গুড়াপত্তন করেন কে? নাসিরাবাদের ঐতিহাসিক বর্ণনায় তা বিভিন্ন ভাবে পাওয়া যায়।
সুলতান আমলের ’নছরতবাদ’ থেকে ’সরকার বাজুহা’ নামকরণঃ
মুঘল আমলে সুবা বাংলাকে প্রশাসনিক সুবিধার্থে ১৯টি সরকারে এবং ৬৮২টি পরগণায় বিভক্ত করা হয়েছিল। সেই সরকারগুলির মধ্যে ‘সরকার বাজুহা’ আকার আয়তনে ছিল অনেক বড়। তৎকালে সরকার বাজুহাকে প্রশাসনিক সুবিধার্থে ৩২টি মহলে বিভক্ত করে। সে সময় সরকার বাজুহার মোট রাজস্ব ছিল ৯৮ লাখ ৭ হাজার ৯২১ টাকা। সিরাজগঞ্জ জেলাটি সেই সরকার বাজুহার ৩২টি মহলের মধ্যে একটি। ‘‘সরকার বাজুহার’’ মধ্যে আমাদের অতি পরিচিত মোমেনশাহী, ভাওয়াল বাজু ও ঢাকা বাজু উল্লেখ আছে। ঢাকার কিছু এলাকা এবং ভাওয়ালগড়সহ বৃহত্তর মোমেনশাহী জেলার সমগ্র এলাকাই ছিল সরকার বাজুহার অন্তর্গত।
ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, ১৮৪৫ সালের পূর্ব পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ ছিল মোমেনশাহী জেলার অন্তর্গত। বলা হয়, সুলতান হোসেন শাহের সময়ে অঞ্চলটি “নছরত শাহী” প্রদেশ নামে পরিচিত ছিল, মুঘল সম্রাট আকবরের রাজ সচিব টোডরমল্লের বন্দোবন্তে তারই নাম ‘সরকার বাজুহা’। উক্ত ‘সরকার বাজুহা’ এর আয়তন ছিল পূর্বসীমা বর্তমানের বৃহত্তর সিলেট জেলার কিছু অংশ, পশ্চিমে বৃহত্তর রাজশাহী, বগুড়া ও পাবনা জেলার অংশবিশেষ এবং দক্ষিণে বর্তমান ঢাকা শহরের দক্ষিন, বুড়িগঙ্গার তীর পর্যন্ত। ইংরেজ আমলেই ‘সরকার বাজুহা’ হলো বিশাল ময়মনসিংহ জেলা।
পূর্ব ময়মনসিংহ মুঘল, সুলতান ও বারভূঁইয়াদের স্মৃতিচিহ্নের স্থানঃ
পূর্ব ময়মনসিংহের ইতিহাস সুপ্রাচীন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের মুঘল ও সুলতান আমলের ৫টি সামরিক দুর্গ বা কেল্লা পর্ব ময়মনসিংহে অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় দু’টি সামরিক দুর্গ- কেল্লা বোকাইনগর ও কেল্লা তাঁজপুর; নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় রোয়াইলবাড়ি; কিশোরগঞ্জ জেলায় জঙ্গলবাড়ি (করিমগঞ্জ) ও এগরসিন্দুর । বস্ততঃ মোমেনসিং পরগনার ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্বর্ণখনি গৌরীপুর উপজেলা। সুলতান ও মুঘল আমলের মসজিদ, মন্দির, টাকশাল, বারভূইয়া এবং মুঘল আমলের দেওয়ান বাড়ি, সর্দার বাড়ি, নবাব আমলের বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ জমিদারদের বাড়ি, মধ্যযুগের অজানা কিছু মাজার, প্রাচীন নির্দশন এ উপজেলায়। গৌরীপুর উপজেলার অস্থিত্ব নয়টি এস্টেটের বারোটি বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ জমিদার বাড়ি ইত্যাদি । কেদারনাথ মজুমদারের মতে, প্রাচীন জমিদার ও জমিদারী শাসনকালে সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ হতে শাহ সুজা রীতিমত বাংলার কর আদায় করতে আরম্ভ করেন। কাননগুর কার্যালয় : রাজস্ব ও জমা জমির বন্দোবস্তের জন্য স্থানে স্থানে কাননগুর কার্যালয় স্থাপিত ছিল। দশকাহনীয়ার (সেরপুর) অন্তর্গত দর্শা, মমিনসাহির (ময়মনসিংহ) অন্তর্গত বোকাইনগর (গৌরীপুর) ও বড়বাজুর অন্তর্গত নালিপা নামক স্থানে তিনটি প্রধান কাননগুর কার্যালয স্থাপিত ছিল। অন্যান্য বিচার আচার পরগণার চৌধুরী (জমিদার) দিগের দ্বারাই সম্পাদিত হতো। এই পরগনা অন্যান্য পরগনার চেয়ে অনেক বড় এবং একটি বৃহৎ জলদুর্গ ও দুটি প্রাসাদ দুর্গ থাকায় সামরিক ঘাটির জন্য বিখ্যাত ছিলো। পূর্ব ময়মনসিংহের বিভিন্ন সময়ের ইতিহাসের কথা উঠে এসেছে। যেমন কামরূপ হতে সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহ-এর জ্যেষ্ঠপুত্র নুসরত শাহ পলায়ন করে মুয়াজ্জমাবাদ (বর্তমান পূর্ব ময়মনসিংহে) আগমন করেন ও পূর্ব ময়মনসিংহের শাসনভার গ্রহণ করেন। এমনি করে মসনদে-আলা-বীর ঈশা খাঁর কথা জানে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তিনি এক প্রতাপশালী জমিদার ছিলেন। তাঁর মূল বাড়ি সোনাগাঁওয়ে অবস্থিত। কিন্তু সেটি ছাড়াও তাঁর আরো একটি বাংলো বাড়ি ও ঘাঁটি ছিল কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জঙ্গলবাড়িতে। এটা বীর ঈশা খাঁর দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে প্রচলিত। তিনি স্বীয় প্রচেষ্টায় ভাটি এলাকার বৃহত্তর ঢাকার ও ময়মনসিংহ জেলার উত্তর-পূর্ব অংশ নিয়ে এক স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ঈশা খাঁর তৃতীয় শক্তিধর, বারো ভূইয়ার নবাব সমতুল্য জমিদার, মুঘল আমলের ইতিহাসখ্যাত তিনটি বইয়ের উল্লেখিত বীরযোদ্ধা আফগান হিরো খাজা উসমান খাঁ উত্তর উরিষ্যা থেকে বোকাইনগরে আসেন। ইতিহাসের পাতা ঘাটলে দেখা যায়, মোমেনসিং পরগনা (উত্তর-পূর্ব ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা) ও জফরশাহীর পরগনা (জামালপুর)- এই দুই পরগনার জমিদার শ্রীকৃষ্ণ রায়চৌধুরীর দুই পুত্র দত্তক নিয়েছিলেন মাধবী তথা আলেয়ার গর্ভজাত নবাব সিরাজ উদ্দোলার ছেলেকে। নবাব সিরাজের পুত্রের নয়া নামকরণ হয় যুগলকিশোর রায়চৌধুরী। সে সময়ের প্রতাপশালী জমিদার যুগলকিশোরের উদ্যোগে মোমেনসিং পরগনা থেকে ‘সরকার বাজুহার’ পরিবর্তে ’মোমেনসিং’ অর্থাৎ ময়মনসিংহের নামকরণ করা হয়। চলমান… ..